মানিকগঞ্জে গুণীজনদের মিলনমেলা
মানিকগঞ্জ থেকে আব্দুর রাজ্জাক ॥
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চান্দইর। এ গ্রামেই অবস্থিত চিকিৎসা সেবার অনন্য দৃষ্টান্ত সাহেরা হাসান মেমোরিয়াল হাসপাতাল। হলি ফ্যামলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের গাইনী বিভাগীয় প্রধান ডা. রওশন আরা ১৭ বছর আগে মা-বাবার নামে এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। শুক্রবার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠান পরিণত হয়েছিল গুণীজনদের মিলনমেলায়।
সকাল থেকেই গ্রামজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। শীতের পিঠা-পুলি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয় অতিথিদের। এরপর মঞ্চে দিনভর চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশ বরেণ্য শতাধিক চিকিৎসক ও গুণীজনদের সম্মাননা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবুল আলম, মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রাণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মাইদুল ইসলাম, জাতীয় অধ্যাপক শায়লা খাতুন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনায়েতুর রহমান, বিচারপতি আশফাকুল কামাল, বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম, সাহেরা-হাসান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট্রের চেয়ারম্যান ডা. রওশন আরা বেগম, অধ্যাপক সামিনা চৌধুরী, অধ্যাপক রহিমা বেগম, কানাডিয়ান হাইকমিশনার ইয়াকুব আলী, মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মিজানুর রহমান খান, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আল মাহমুদ ফয়জুল কবীর, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র জজ হাসিনা রওশন জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক (রাজস্ব) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন, জাতীয় পার্টি-জেপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের সিদ্দিকী আবুসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতালটির ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, গরিব রোগীদের নামমাত্র অর্থে চিকিৎসা সেবা দিতে ২০০১ সালে চান্দাইরের অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজ খরচে গড়ে তুলেন সাহেরা হাসান মেমোরিয়াল হাসপাতাল। নামমাত্র মূল্যে রোগী দেখা ও তাদের অপারেশন বিশেষজ্ঞ চিকৎসকের মাধ্যমে বিনামূল্যে দেয়ার কারণে ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা এই হাসপাতালে আসেন। এছাড়া সপ্তাহে সোমবার শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, প্রাইমারী স্কুল শিক্ষিকা, গার্মেন্টস কর্মী ও অসহায় রোগীদের সেবা প্রদান করা হয়।
এছাড়া ঢাকার বাইরে ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত নামমাত্র মূল্যে প্রায় চার হাজার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, প্রাইমারি স্কুল শিক্ষিকা, গার্মেন্টস কর্মীদেরকে সেবা দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালটিতে রয়েছে ২টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার ও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ২০১৬ থেকে চালু হয়েছে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারী কোর্স। যেখানে শুধু নামমাত্র খাবার খরচ দিয়ে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীরা এই কোর্সটি সমাপ্ত করতে পারবে। এই কোর্স সমাপ্তকারীরা পাস করার পর সরকারি চাকরির পাশাপাশি দেশ-বিদেশে চাকরির সুযোগ থাকবে।