বাগদি জনগোষ্ঠির শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার
মাধরী বাগদি ও বিশাল বাগদি পড়াশোনার পাশাপাশি আয়-রোজগারের জন্য স্কুল শেষে ভেড়া ও ছাগল পালনে বেরিয়ে পড়ে মাঠে। দু’জনে চতুর্থ শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। অভাবের সংসারে চলে তাদের দিনরাত্রি। ঘিওর উপজেলার শ্রীধরগঞ্জে আদিবাসি বাগদি সম্প্রদায়ের বসবাস। অভাব ও পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ কম থাকায় পিছিয়ে পড়ছে তারা। তাদের সামর্থ্য নেই খাতা-কলম কেনার! এ আদিবাসী শিশুদের লেখাপড়ায় মনোযোগী করানো এবং শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধ করার জন্য বারসিক মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন থেকে ৫০টি বাগদি পরিবারের শিশুদের জন্য খাতা-কলমের ব্যবস্থা করেছে সম্প্রতি।


শিশুরা খাতা কলম উপহার পেয়ে মুখে যেন বাঁধভাঙা হাসি ফোটে। নবদ্বীপ বাগদি (২য় শ্রেণী) বলে, ‘‘নতুন খাতা-কলম লইয়া ইসকুলে যামু। আমার খাতা আছিল না। কাল খাতা কলম নিয়া ইসকুলে যাইতে পারুম।’ ষষ্ঠ শ্রেণীর শিবু বাগদি হাতে নতুন খাতা পেয়ে বারবার ঘ্রাণ নিচ্ছে আর বলছে, ‘মায়েরে নিয়া এই খাতা-কলম দেহামু।’
মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের দেয়া খাতা-কলম বারসিক’র তত্বাবধানে ঘিওর উপজেলার শ্রীধরগঞ্জ বাগদি জনগোষ্ঠির ৬০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে খাতা-কলম বিতরণ করা হয়। শিশুদের উৎসাহ দেখে বাগদি জনগোষ্ঠির মায়েরা বলেন, ‘আমরা আমাদের শিশুদের পড়ালেখার প্রতি যতœ নেবো, আর মেয়েদেরকেও লেখাপড়া করাবো, কম বয়সে মেযেদের বিয়ে দেবো না।’


সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা খাতা ও কলম পেয়ে অনেক খুশি। ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তি মমতা বাগদি বলেন, ‘আমাদের মা-বাবার সামান্য আয়ে তারা খাতা-কলম নিয়মিত কিনতে পারত না। নতুন খাতা-কলম পেয়ে তারা আনন্দে আত্মহারা।’


শিক্ষা উপকরণ বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন ঘাতক দালার নিমূল কমিটির মানিকগঞ্জ জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ, বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায়, প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. মনোয়ার হোসেন, এ্যাডওযার্ড জামানসহ এলাকার মিলন বাগদি, সুনীর বাগদি, সুচিত্রা বাগদি, কাকলি বাগদি, মান্না বাগদি, শিপ্রা বাগদি প্রমুখ।

happy wheels 2

Comments