আনন্দময় নিরাপদ শৈশব চাই
নেত্রকোনা থেকে তাসমিয়া তহুরা
নেত্রকোনা পৌরসভার চকপাড়া। চকপাড়ায় গত তিনবছর আগে হৈচৈ পড়ে যায়। সাংবাদিকগণ চকপাড়ায় শিশুদের খবর সংবাদপত্রে প্রচার করতে থাকেন আনন্দের সাথে। চকপাড়ার হরিজন পল্লীতে আনন্দ আর ধরেনা। কারণ ছিলো একটিই হরিজন পাড়ায় এই প্রথম প্রিয়া বাসফোর ও চাদনী বাসফোর এসএসসি পাশ করেছে!
শিক্ষার আলো সবাইকে আনন্দ দেয়। সকল জাতিগোষ্ঠির সকল শিশুই শিক্ষা গ্রহণ করতে চায়, স্কুলে যেতে চায়, খোলা মাঠে খেলাধুলা করতে চায়, নদীতে সাঁতার কাটতে চায়, গান গাইতে চায়, বেড়াতে যেতে চায়।
জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ এ নেত্রকোনার চকপাড়ার দলিত পরিবারের শিশুরা আরো দশজন শিশুর মতই তার নিরাপদ শৈশব আশা করে। চকপাড়ার শিশুরা জাতীয় শিশু দিবসে নিজেদের মনের কথা, স্বপ্নের কথা, কাগজে লিখে সকলের সামনে তুলে ধরে। ভবিষ্যতে বড় হয়ে তার পিতামাতার মতো আর ঝাড়– দিতে চায়না। জীবনের পরিবর্তন চায়। লেখাপড়া করে জীবন বদলানোর অধিকার তারা আশা করে।
সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গ্রামে- হাওরে-পাহাড়ে বেড়ে ওঠা দরিদ্র পরিবারের শিশুরাও আজ বিদ্যালয়মূখী। তবে শিক্ষা সাগরের এই ঢেউ দলিত পরিবারের শিশুদের জীবনে লাগেনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য কোটা ব্যবস্থা থাকলেও দলিতদের জন্য তা নেই। আইনি সুরক্ষার সুযোগ না থাকায় দলিত মেয়েদের মধ্যে বাল্যবিয়ের হারও বেশি। দলিত নারীরা এখনও সরকার ঘোষিত মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে বঞ্চিত।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের ভালোবাসতেন। সকল শিশুর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে বৈষম্যহীন সোনার বাংলা গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করে সরকার। আর দিবসটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল শিশুর শিক্ষা লাভের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, তা পূরণে আমাদের মতো দায়িত্ববানদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।