স্থানীয় পরিবেশ ও প্রতিবেশকে রক্ষা করেই উন্নয়ন হোক: বন ও পরিবেশম্ত্রণালয়ের যুগ্নসচিব এ কে এম মিজানুর রহমান
:: বারসিক রাজশাহী থেকে শহিদুল ইসলাম ও অমৃত কুমার সরকার
বন ও পরিবেশম্ত্রণালয়ের যুগ্নসচিব এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, “পরিবেশ ও প্রতিবেশকে রক্ষা করেই উন্নয়ন উদ্যোগ পরিচালনা করা উচিত।” তিনি বলেন, “স্থানীয় পরিবেশ-প্রতিবেশকে টিকিয়ে রেখেই সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হতে হবে। আমাদের অনেক সম্পদ আছে, সেগুলো রক্ষা এবং ব্যবহার করতে হবে। একই সাথে উন্নয়নের নামে তা ধ্বংস করা যাবে না।“
গত ১৪ নভেম্বর রাজশাহীর তানোর পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয় হল রুমে তানোর উপজেলা প্রশাসন এবং বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে তানোর উপজেলায় অনুষ্ঠিত “পরিবেশ-প্রতিবেশের সমস্যা-সম্ভাবনা এবং উন্নয়ন” বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাটি তিনি বলেছেন। মতবিনিময় সভায় তানোর উপজেলার কৃষি, মৎস্য, বিএমডি, যুবকসহ সব বিভাগের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন-রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক একে এম মাসুদুজ্জামান, উপ-পরিচালক এ কে এম রফিকুল ইসলাম ও নাজিম উদ্দিন এবং নানা পেশাজীবীর সংগঠন, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের যুগ্নসচিব একে এম মিজানুর রহমান বরেদ্র অঞ্চলের সব ধরনের উন্নয়ন উদ্যোগ পরিবেশ ও প্রতিবেশকে মাথায় রেখেই বাস্তবায়ন করার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বিলকুমারী মৎসজীবী সমবায় সমিতিরি সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “শিবনদী উৎসমুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেই ১৯৬২ সালে উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু সেই সময় এই নদীটির উৎসমুখ বন্ধ করায় ধীরে ধীরে নদীটি মরে গেছে, যার ফলে মৎসজীবীদের সমস্যা হয়েছে। এ ছাড়াও এ অঞ্চলের নানা ধরনের বিপর্যয় দেখা যাচ্ছে, যা আপনাদের কথা থেকেই বোঝা গেলো।” মতবিনিময়সভায় তিনি তানোর উপজেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে তানোর উপজেলার উন্নয়ন সম্ভাবনার দিকগুলো জানার চেষ্টা করেন। সভায় স্থানীয় অংশগ্রহণকারীগণ বরেন্দ্র খ্যাত তানোর উপজেলার ভূ-উপরিস্থ্ পানির ব্যবহার বাড়াতে পুকুর, শিবনদী এবং পরিত্যক্ত ভরাট প্রায় খাড়িগুলো খননের জোর দাবি জানান। একই সাথে তারা কমপানি নির্ভর শস্য ফসলের প্রসারে গবেষণা করার প্রয়োজনীয়তা সচিবকে জানান। অংশগ্রহণকারীগণ পানির অপচয়রোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ফসলে জৈবসার এবং জৈববালাই ব্যবহারের প্রসার বাড়াতে উদ্যোগী হওয়া ও সহযোগিতা করার দাবি জানান।
মতবিনিময় ও আলোচনা শেষে যুগ্নসচিব একেএম মিজানুর রহমান পরিবেশ-প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উদ্যোগ প্রত্যক্ষভাবে দেখার জন্যে আগ্রহের কথা প্রকাশ করলে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাঁকে বারসিক’র কাজের এলাকায় নিয়ে যান। বারসিক প্রতিনিধি এবং স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ বারসিক’র আমশো যুবকের উদ্যোগে, আমশো শখ ও স্বপ্ন নার্সারি, তানোর বিলকুমারীর মৎসজীবী সম্প্রদায়ের শিতলী ও কুঠিপাড়া, মথুরাপুরের আদিবাসী সম্প্রদায় এবং তানোর কালিগঞ্জ এর পালপাড়ার মৃৎশীল্প সংগঠনের কার্যক্রম এবং উদ্যোগসমূহ পরিদর্শন করেন। এ সময় পালপাড়ারা মৃৎশিল্পীগণ তাঁদের নিজস্ব তৈরি বাঙালি এতিহ্য উপকরণ যুগ্নসচিবকে উপহার দেন।