সাম্প্রতিক পোস্ট

শ্যামনগরে কুড়ানো শাকের মেলা অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরা, শ্যামনগর থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল
বারসিক’র উদ্যোগে সম্প্রতি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালমেঘা গ্রামের কালমেঘা কৃষি নারী সংগঠনের সহায়তায় অচাষকৃত খাদ্য ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পুষ্টি সচেতনতায় গ্রামীণ পাড়া মেলা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলায় কালমেঘা ও চিংড়াখালী গ্রামের কৃষক-কৃষাণী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বারসিক কর্মকর্তাবৃ› সহ বিশেষ অতিথি হিসাবে ডিয়াকোনিয়া সুইডেন ও বাংলাদেশ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।


মেলায় ২০ জন গ্রামীণ নারী তাদের নিজ নিজ এলাকা বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩০ ধরনের অচাষকৃত উদ্ভিদ সংগ্রহ করে নিয়ে প্রদর্শনী করেন। প্রদর্শনীতে এ সকল উদ্ভিদের প্রাপ্তিস্থান, গুণাবলী, ব্যবহার, কোন মৌসুমে বেশি পাওয়া যায়, কোনটি কি দিয়ে রান্না করা হয়, কোনটি মানুষ ও প্রাণীর ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয় এসব বিষয় তুলে ধরেন প্রদর্শনকারীরা।


মেলায় অংশগ্রহণকারী বলেন, ‘আমরা উপকুলীয় এলাকার মানুষ আমাদের প্রতিনিয়ত নানান ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করে টিকে থাকতে হয়। আর দুর্যোগের ফলে এলাকা থেকে নানান ধরনের উদ্ভিদ বৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও কম পাওয়া যায় বলে এগুলোর ব্যবহার কমে যাচ্ছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে এসকল উদ্ভিদের ব্যবহার বাড়াতে হবে। তার জন্য এ ধরনের মেলা খুবি গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁরা আরও বলেন, ‘প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে যে এখনো আমাদের এলাকা এতো ধরনের উদ্ভিদ বৈচিত্র্র্য আছে তা এই মেলার মাধ্যমে এক জায়গায় দেখতে পেলাম। সাথে সাথে এগুলোর গুণাবলী সম্পর্কে যেমন জানতে পারলাম, তেমনিভাবে আমাদের ছেলে মেয়েরাও জানতে পেরেছে এই কুড়ানো শাকের মেলার মাধ্যমে। করোনার সময় আমরা খুবই ভালোভাবে বুঝেছি এ উদ্ভিদগুলোর কত গুরুত্ব। করোনার সময় যেমন আমরা সবজী উৎপাদন করতে পারিনি তেমনি ভাবে বাজারেও দাম বেশি ছিলো। আমাদের অনেক পরিবারের খাদ্য চাহিদা মিটিয়েছিলাম এ কুড়ানো শাক দ্বারা। এগুলো আমাদের সকলের উদ্যোগে টিকিয়ে রাখতে হবে।’


মেলায় অংশগ্রহণকারী অতিথিরা জানান, ‘এটা খুবই ভালো একটি কাজ। তরুণদের মাঝে অচাষকৃত এ শাকের গুণাগুণ জানানো হচ্ছে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমাদের দেশেও সবুজ শাকসবজি পাওয়া যায় কিন্তু আমরা একসাথে একজায়গায় এতো ধরনের উদ্ভিদ কোন দিন দেখেনি। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর এবং বারসিক’র সাথে কাজ করতে পেরে আমরা গর্বিত।


মেলায় এককভাবে ১৩০ প্রকার উদ্ভিদ প্রদর্শনী করে প্রথম হন শিক্ষার্থী ইন্দ্রা গায়েন। ১১৮টি উদ্ভিদের প্রদর্শন করে ২য় হন শিক্ষার্থী ফাল্গুনী মন্ডল এবং ১১৪টি নানান প্রজাতির উদ্ভিদ প্রদর্শন করে ৩য় হন কৃষানী অদিতী রানী। সবশেষে অতিথিবৃন্দ মেলায় অংশগ্রহণকারীদের পুরুস্কার প্রদানের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

happy wheels 2

Comments