‘দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো নারীবান্ধব হোক’

শ্যামনগর,সাতক্ষীরা থেকে মফিজুর রহমান

আলাদা কোন জায়গা ছিল না। নারী-পুরুষ সবাইকে এক ঘরে থাকতে হতো। নারীদের শরীর খারাপ হলে  কাপড় পরিষ্কার করতে হতো লবণ পানিতে। সেগুলো শুকানোরও কোন জায়গা ছিল না। বাধ্য হয়েই লুকিয়ে রাখতে হতো। না শুকানোয় অনেকে আধা ভেজা কাপড় ব্যবহার করতো। এতে নারীদের নানা রোগের সম্মুখীন হতো।’

সম্পতি (৬ অক্টোবর) সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রে বারসিক উদ্যোগে আয়োজিত ‘দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো নারীবান্ধব হোক’ মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে এভাবেই দুর্যোগকালীন অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন ঝাপা গ্রামের অঞ্জলি রানী।
sat-photo-1-copy
সভায় অংশ নিয়ে একইভাবে পাখিমারা গ্রামের মিরাতুন্নেছা বলেন, “আমাদের সাথে আশ্রয় কেন্দ্রে তিনজন গর্ভবর্তী নারী ছিলেন। তারা সবসময় পুরুষের সামনে থাকতে লজ্জা পেত। হঠাৎ দুর্যোগ আসায় অনেকেই কাপড় চোপড় গুছিয়ে আনতে পারেনি। পুরুষদের সামনে দিয়ে বাথরুমে যেতেও লজ্জা লাগত। লজ্জার কারণে অনেকেই বাথরুম চেপে রাখতেন।”  তিনি আরও বলেন, “যে কোন দুর্যোগেই নারী-শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো নারীবান্ধব করার কোন বিকল্প নেই।”

মতিবিনিময় সভায় বক্তারা জানান, কেউ আমাদের মা, কেউ আমাদের বোন। তাদের সুবিধার জন্য দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখতে হবে। 1এছাড়া বক্তারা পদ্মপুকুর ইউনিয়নের নয়টি দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে সাতটি নারীদের থাকার অযোগ্য উল্লেখ করে বলেন, “এসব আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার মতো সিড়িও নেই।” বক্তারা একই সাথে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো তিন তলায় উন্নীতকরণ, আশ্রয় কেন্দ্রে বৃদ্ধ-নারী-শিশু-প্রতিবন্ধীদের উঠার জন্য বিশেষ সিড়ির ব্যবস্থা ও নারী-পুরুষদের আলাদাভাবে থাকার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন পদ্মপুকুর ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম, ইউপি সদস্য শাহানারা বেগম, প্রাক্তন ইউপি সদস্য আশরাফ হোসেন, প্রাক্তন ইউপি সদস্য নারগিস পারভীন সমাজ সেবক শওকত হোসেন গাজী, ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি মোশারফ হোসেন, পাখিমারা গ্রামের মোমেনা বেগম, কামালকাটি গ্রামের বিথিকা মন্ডল, বারসিক কর্মকর্তা মফিজুর রহমান, বাবলু জোয়ারদার, সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিমের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান প্রমুখ।

happy wheels 2