জীবনকে বুঝবার পূর্বেই ওদের জীবন যুদ্ধ শুরু
চাটমোহর, পাবনা থেকে ইকবাল কবীর রনজু
বারো বছর বয়ষ্ক শরীফের বাড়ি বগুড়ার ধুনটের মথুরাপুর গ্রামে। পিতা বাবুল ছিলেন একজন কৃষি শ্রমিক। তিন চার বছর পূর্বে জমি চাষ করার সময় পাওয়ার টিলারের লোহার ফলা পায়ে বিধে তার। পরে সেখানে সেপটিক ঘা হয়ে যায়। কেটে ফেলতে হয় পা। কর্মহীন হয়ে পরে সে। পরিবার পরিচালনায় শুরু করে ভিক্ষা বৃত্তি।
বাবুলের দুই ছেলের মধ্যে বড় আরিফ। সে বেছে নিয়েছে ঘোড় সওয়ারের কাজ। আর ছোট ছেলে শরীফ হরেক রঙের বেলুন বিক্রি করছেন দেশের বিভিন্ন এলাকায়। স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়নি তারা কখনো। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে বেলুন বিক্রেতা শরীফ এভাবেই ব্যক্ত করে তার জীবনের গল্প ।
বগুড়ার মহাস্থান গড় এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আশিকের বয়স নয় বছর। জীবন কি এটা বুঝবার পূর্বেই তাকে শুরু করতে হয়েছে জীবন যুদ্ধ। স্কুলের জীবন হাতছানি দিয়ে ডাকলেও উপার্জনের প্রয়োজনে বেরুতে হয় বেলুন হাতে পথে।
আশিক বলে, “বাবা রিক্সা চালাতো। এ্যাকসিডেন্ট করে পঙ্গু হয়। এখন ভিক্ষা করে। তিন ভাই বোনের মধ্যে আমি মেঝ। বড় বোন শরীফা কুষ্টিয়া এলাকার একটি এতিম খানায় থাকে। ছোট বোন শুকুরীর বয়স সাত। সংসারের প্রয়োজনে বেলুন বিক্রি করতে পথে বাড়াই। ৯০ টাকার বেলুন কিনে আজ ৩শ’ ৪০ টাকা বিক্রি করেছি। এক দেড় মাস পর পর বাড়ি যাই।”
“উল্লাপাড়া রেলওয়ে ষ্টেশনের পাশের পারভীন নামক এক মহিলাকে খালা ডাকি। ষ্টেশনে থাকি আর খালার ওখানে খাই।” নয় বছরের আশিক উল্লাপাড়া ষ্টেশনে ঠিক এভাবে শোনান তার ছবির মতো জীবনের গল্প।