সাম্প্রতিক পোস্ট

দুর্যোগ মোকাবেলায় হরিরামপুর নারীদের উদ্যোগ

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলা একটি দুর্যোগপ্রবণ উপজেলা হিসেবে চিহ্নিত। প্রতিবছরই বন্যা ও নদী ভাঙনের ফলে শাকসবজি কৃষি ফসলসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি কমাতে এলাকার জনগোষ্ঠি বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার মধ্যে রয়েছে বন্যা মোকাবেলায় বাড়ির আশেপাশে উচু ভিটি করে মিষ্টি লাউ, চালকুমড়া, ধুন্দল, শসা, শিমসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা।


হরিরামপুর উপজেলা পাটগ্রামচর, হালুয়াঘাটা, গঙ্গাধরদি, হরিহরদিয়াচর, আন্ধারমানিক, কর্মকারকান্দি, দাসকান্দি, খালপাড় বয়রাসহ নি¤œ অঞ্চল হওয়ার কারণে প্রতিবছর বন্যার কারণে আবাদি জমিসহ বাড়ির আশেপাশে পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়। ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য হরিরামপুর উপজেলার নারীরা তাদের বসতভিটায় মাটি দিয়ে উচু করে ভিটি করে সবজি চাষ করেন। যাতে বন্যা হলে যেন তারা তাদের ক্ষতির পরিমাণ কমে আসে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন। কর্মকার কান্দি গ্রামের কৃষক চানবুরু বেগম বলেন, ‘পদ্মা নদীর কোলে থাকি প্রায়ই বছরই কমবেশি বন্যার পানি আসে। কোন বছর কম হয় আবার কোন বছর বেশি হয়। বর্ষার পানি থেকে শাকসবজি রক্ষার জন্য আমাগো উচু ভিটি করে বীজ লাগাই। যাতে বর্ষার পানিতে মরে না যায়।’


মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা নি¤œ অঞ্চল হওয়ার কারণে প্রতিবছরই বন্যার পানি আসে। তাই এলাকার মানুষের জান মাল ও তাদের সম্পদ রক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন্ ধরনের পূর্ব প্রস্ততি গ্রহণ করেন। হরিরামপুর উপজেলার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে রয়েছে বন্যা, নদী ভাঙন, খরা, বজ্রপাত, অতিবৃষ্টি, ঝড় ইত্যাদি। বন্যা মোকাবেলায় নারীরা যে সকল উদ্যোগ নিয়ে থাকেন তার মধ্যে রয়েছে বৃক্ষ রোপণ, উচু ভিটায় মরিচ বেগুন চাষ, মাচায় পটল চাষ, মিশ্র ফসল চাষ, বন্যা সহনশীল আমন ধানের চাষ, মাটির পাত্রে সবজি বীজ বপনসহ নানা ধরনের উদ্যোগ।


এছাড়া তাদের নিজস্ব জানমাল সম্পদ রক্ষার জন্য তাদের দীর্ঘ দিনের লোকায়ত চর্চা ও স্থানীয় সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে বন্যার পূর্ব প্রস্ততি আরো যে উদ্যোগুলো গ্রহণ করেন তা হলো; বাড়ি ভিটা উঁচু করা, ঘরে মাচা তৈরি করা, রান্নার জন্য আলগা চুলা তৈরি, গবাদি প্রাণীর খাদ্য মজুদ করা, ঘরে কিছু শুকনা খাবার চিড়া, মুড়ি, গুড়, ছাতু মজুদ করা, ডিঙ্গি নৌকা মেরামত করা, টিউবওয়েল, কলাগাছ চিহ্নিত করে রাখা, উঁচু স্থান চিনে রাখা, উঁচু ভিটা বাড়ির আত্মীয়স্বজনদের যোগাযোগ করে রাখা, গরু, ছাগল, ভেড়া, ঘোড়া রাখার জন্য উচু স্থান চিহ্নিত করা, রান্নার জন্য জ¦ালানি মজুত করা, ঘরে কিছু জরুরি ঔষুধপত্র ঘরে রাখা ইত্যাদি।

happy wheels 2

Comments