জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তরুণ-যুবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে
প্রেসবিজ্ঞপ্তি, ঢাকা
বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং বারসিক’র যৌথ আয়োজনে মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হল, জাতীয় প্রেস ক্লাব ঢাকা-তে আজ ২৭ নভেম্বর “দুবাই জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৮): জনগণের প্রস্তাবনা” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলন মূল বক্তব্য প্রদান করেন বারসিক এর পরিচালক পাভেল পার্থ। আরও বক্তব্য প্রদান করেন বারসিক এর সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বারসিক এর প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সাগর, ক্যাপস-এর লিগ্যাল ডিরেক্টর ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদার, পরিবেশ উদ্যোগ এর গবেষণা সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কায়সার আহমেদ এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নিখিল ভদ্র।
সভাপতির বক্তব্যে ক্যাপস এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জলবায়ু সম্মেলন এমন একটি প্লাটফর্ম, যেখানে সমস্ত দেশই আসে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় একত্রিত হয়ে কাজ করার জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ করবো দেশের সকল অঞ্চলের মানুষের দাবিগুলো জলবায়ু সম্মেলনে তুলে ধরুন। মূল জলবায়ু সম্মেলন হয়ত কয়েক দিনের কিন্তু ন্যায্যতা আদায়ের জন্য আমাদের সারা বছরই কাজ করতে হবে। জলবায়ু ন্যায্যতা আদায় ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসাবে যুবকদের স্বীকৃতি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাভিত্তিক সমাধানকে উত্সাহিত করতে হবে।
মূল বক্তব্যে বারসিক’র পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, বিশ্বের ধনী ও উন্নত দেশের প্রায় একভাগ মানুষ যে পরিমাণ কার্বন নির্গমণ করে সেই পরিমাণ কার্বন নির্গমন করে বিশ্বের প্রায় ৬৬ ভাগ মানুষ। সেদিক থেকে বাংলাদেশের কার্বন নির্গমনের পরিমাণ খুবই নগণ্য। তারপরও প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন দুর্যোগ ও বিপদাপন্নতার শিকার হচ্ছে। তাই, এবারের জলবায়ু সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের দেশের জন্য লস এন্ড ড্যামেজ তহবিলের ইকোনমিক এবং নন ইকোনমিক উভয় নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ইকোনমিক লসের সাথে ননইকোনমিক লস ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নিজেদেরকেও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার সকল পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে তরুণ-যুবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন, শিক্ষা, নিরাপদ পানি, বিদ্যুৎ ও নিরাপদ জ্বালানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশকে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।’
ক্যাপস-এর লিগ্যাল ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ দায়ী না হয়েও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি যদি একটি জাহাজের সাথে তুলনা করি তাহলে এর নিচ তলায় আছে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশ এবং উপরতলায় আছে উন্নত দেশগুলো, শেষ পর্যন্ত জাহাজডুবি অর্থাৎ ভয়াবহ দূর্যোগ হলে কেউ বাঁচতে পারবে না। তাই সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়ে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কায়সার আহমেদ বলেন, ‘এবছর বার্ষিক তাপমাত্রা প্রায় সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে, এবং ভবিষ্যতে এটি আরও তীব্র হওয়ার আশংকা রয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে আমরা চাই এবছরের জলবায়ু সম্মেলনেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনার বিষয়টি আরও কার্যকর করতে হবে।
দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নিখিল ভদ্র বলেন, ‘জলবায়ু ন্যায্যতার অভাবে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই জলবায়ু ন্যায্যতা ও ক্ষতিপূরণের দাবি নিশ্চিত করতে হবে এটি কোন ঐচ্ছিক বিষয় নয়, এটি একটি ন্যায্য অধিকার।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বারসিক’র সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিবেশ উদ্যোগ এর গবেষণা সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী , বারসিক এর প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সাগর
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ক্যাপসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইঞ্জি মারজিয়াত রহমান, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন, সিনিয়র লেকচারার মাহমুদা ইসালাম, প্রভাষক হুমায়ুন কবির এবং জলবায়ু কর্মী মোহাইমিনুল ইসলাম জিপাত সহ আরও অনেক পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ।