জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

সিংগাইর থেকে শাহীনুর রহমান ও গাজী শাহাদাৎ হোসেন বাদল

প্রকৃতি বাঁচলে আমরা বাঁচবো, আমার পরিবেশ আমার দায়িত্ব’ এই স্লোগানের আলোকে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের রফিক নগর শহীদ রফিক স্মৃতি গ্রন্থাগার ও জাদুঘরে ‘জলবায়ু পরিবর্তনেরর ঝুঁকি নিরসনে করণীয়’ শীর্ষক আন্তঃপ্রজন্ম সংলাপ ও শহীদ রফিক স্মরণে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্পৃতি। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বেতিলা বন্ধু সংঘ।

FB_IMG_1563253267110
অনুষ্ঠানে বলধারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সিংগাইর উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আব্দুল মাজেদ খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন (লুডু)। বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাষা শহীদ রফিকের ছোট ভাই বীর মুক্তি যোদ্ধা মো. খোরশেদ আলম, বলধারা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বেতিলা বন্ধু সংঘের সভাপতি মো. দুলাল হোসেন, বারসিক কর্মকর্তা গাজী শাহাদাৎ হোসেন বাদল, স্থানীয় শিক্ষার্থী ও কৃষক কৃষাণীবৃন্দ।

FB_IMG_1563253320973
সংলাপে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ ও সচেতনতা। জলবায়ু পরিবর্তন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর টেকসই জীবনযাত্রা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। জলবাযু পরিবর্তনের ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার বেশির ভাগ জমিই নদী গর্ভে বিলীন হয় এবং উৎপাদনশীল কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। রাসায়নিক সার বিষের মাত্রা কমিয়ে, জৈব সার ব্যবহার বৃদ্ধি করে পরিবেশবান্ধব কৃষিচর্চা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিরসন করা যেতে পারে।’ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আব্দুল মাজেদ খান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কোন বিশেষ গোষ্ঠী বা দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত দেশে এই ক্ষতিকর প্রভাব আরও বেশি লক্ষ্য করা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমদের দেশের নারী, শিশু এবং প্রবীণ মানুষ বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কৃষি জমিতে অনুমোদনহীন ইটের ভাটা তৈরি হয়ে কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে এবং তার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’

IMG_20190712_105803
মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, ‘পরিবেশ মানুষ, জলবায়ু খুবই ঘনিষ্ঠভাবে আন্তঃসম্পর্ক যুক্ত। আমাদের দেশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের কৃষির সাথেও আবহাওয়া পরিবেশ এবং জলবাযুর রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। জলবায়ু পরিবর্তনের দুটি কারণ লক্ষ্য করা যায়। একটি হলো প্রাকৃতিক কারণ আর অন্যটি হলো মনুষ্য সৃষ্টি কারণ। এই দু’টি কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে এবং কৃষি ক্ষেত্রে বন্যা খরা, লবণাক্ততা, জলবদ্ধতা হচ্ছে এবং এতে কৃষি জমির উর্বরতা হারাচ্ছে।’ বিমল রায় বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্যতা হারাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে ঋতুবৈচিত্র্য। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, বরফগলার কারণে কৃষির উৎপাদন কমে যাচ্ছে এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। বিনা প্রয়োজনে বৃক্ষ নিধনের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলছি। কিন্তু একজন মানুষ প্রতিদিন যে পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ করে তার জন্য কমপক্ষে ৭ থেকে ৮টি গাছের প্রয়োজন হয়। কাজেই আমরা নিজেদের ভালো থাকার জন্য হলেই নিজ উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।’

অনুষ্ঠান শেষে বারসিকের সহায়তায় ২০০ টি আম, পেয়ারা, জাম, আমলকি, নিম, বহেরা, মেহগনি বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়।

happy wheels 2

Comments