প্রাণীসম্পদ বাঁচাই পরিবারের আয় বাড়াই
উপকূল থেকে বাবলু জোয়ারদার
রমজাননগর ইউনিয়নের ভেটখালী গ্রামে স্থানীয় জনগোষ্ঠি ও শতবাড়ির সদস্য অনিমা রানীর উদ্যোগে প্রাণী সম্পদের রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রতিষেধক টীকা প্রদান কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়েছে সম্প্রতি। অনুষ্ঠানে গ্রামের ৫৭টি পরিবারের ১৪০টি গরু, ৮৮টি ছাগল ও ৬টি ভেড়ার ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক টিকা দেওয়া হয়।
উপকূলীয় এলাকায় পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় শুধু মানুষ নয় প্রানী সম্পদ লবণাক্ত পানি পান করে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রাণী সম্পদের খাদ্যের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে উপকূলীয় এলাকায় দেখা দিয়েছে প্রাণী সম্পদের খাদ্যের অভাব।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে ঝুকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। উপকূলীয় এলাকার বাঁধগুলো ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে আমাদের কৃষি জমিকে লবণাক্ত করে ফেলেছে। ফলে এই অঞ্চলের কৃষিভিত্তিক জীবন ও জীবিকা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জলবাযুর পরিবর্তনের কারণে এই এলাকায় লবণাক্ততার পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। দিন যত যাচ্ছে বাংলাদেশের মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলের জীবন ও জীবিকা ততটা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি দিন দিন কমে যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে প্রাণী সম্পদের খাদ্য। নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও স্থানীয় জনগোষ্টি প্রাণী সম্পদ পালন করে যাচ্ছে। প্রাণী সম্পদ আমাদের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। আমরা গরু দিয়ে হাল চাষ করতে পারিনা। গরুর গায়ে সেই জোর নেই।
উপকূলীয় এলাকায় স্থানীয় জনগোষ্ঠির পুষ্টির চাহিদা পূরণে প্রাণীসম্পদ পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। সম্প্রতি ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে প্রাণী সম্পদ পালনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্রমাগত বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রাণী সম্পদের নানা ধরনের রোগ-ব্যাধির আশংকা।
এই প্রসঙ্গে হরিপদ মন্ডল (৬০) বলেন, ‘আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। দিন দিন জিনিসপত্রের দামও বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে আমাদের এলাকায় প্রাণী সম্পদ পালন করতে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সারাবছর নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার খাবারের অভাবও আছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে যদি এই রোগের টিকা দেওয়া যায় তাহলে আমাদের এলাকার প্রাণী সম্পদ রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে। প্রাণী সম্পদ পালনে স্থানীয় জনগোষ্ঠির আগ্রহ বাড়বে।