মানিকগঞ্জের ‘সানাইল’ মেলার কথা বলছি
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে আছিয়া আক্তার
সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়রের ঐতিহ্যবাহী সানাইল মেলা তার আশপাশের অনেক গ্রামের মানুষগুলোকে একত্রিত করে সাংস্কৃতিক জাগরণের উৎসব মুখর এক প্রাণকেন্দ্রের রূপ দান করেছে। এটি মূলত বড়ার মেলা নামেই পরিচিত। সারি সারি বড়ার দোকানই বেশি এ মেলাতে দেখা যায়। আগে ১০১টা বড়ার দোকান বসতো এখানে। নারী-পুরুষ, যুবক,শিশু-কিশোর, বৃদ্ধসহ সকল ধর্মের মানুষ এ মেলাতে অংশগ্রহণ করেন ।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/01/IMG_20230122_154915-1024x768.jpg)
পৌষ মাসের শাকরাইনের দিন শুরু হয় এ মেলা। ১৮/২০ দিন স্থায়ী থাকে এটি। মৃত হিরালাল সরকারের ছেলে ডাঃ অনাথ বন্ধু সরকার (৬০) এ মেলা পরিচালনা করছেন। সাড়ে ৩০০ শত বছর ধরে এ মেলা চলে আসছে। কেন এ মেলা মেলানো হয়েছিল তার সঠিক তথ্য এখনো লোকের অজানা। এটি মূলত বংশ পরম্পরায় চলে আসছে এবং চলতেই থাকবে। এখানে একটি বটগাছ আছে, যার চারপাশকে কেন্দ্র বসে এই মেলা। হিন্দু-মুসলমানসহ সকল ধর্মের মানুষ তাদের মনের আশা পূরণসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন কিছু মানত করেন। যেমন-বটগাছের গোড়ায় মাটির ঘোড়া, কবুতর উড়ানো, পাঠা ছাড়া ইত্যাদি।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/01/IMG_20230122_154124-1024x768.jpg)
বাচ্চাদের আধুনিক প্লাস্টিকের খেলনার সাথে আগের দিনের মাটির হাড়ি, পাতিল, মরিচ বাটার পাটা (শিল-নোরা), জগ, চুলাসহ মাটির টমটম গাড়ি সব খেলনাই পাওয়া যায় এ মেলাতে। বাচ্চাদের হাতে মাটির এ টমটম গাড়ি আর বাঁশি আওয়াজে চারপাশ মুখরিত হয়ে ওঠে । নারীদের সাংসারিক কাজের সব মাটির সামগ্রীও পাওয়া যায় এখানে। নারীরা মেলাতে এসে মুড়ি ভাজার ঝাঁঝড়, ছাবনা, ডাকনাসহ সব প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করেন। ছোট একটু জায়গাজুড়ে এ মেলা শুরু হলেও এর আনন্দের আমেজটা বহুদূর পর্যন্ত ছুয়ে যায়।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/01/IMG_20230122_154138-1024x485.jpg)
আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য এ মেলার গুরুত্ব অত্যাধিক। কেননা তারা যেভাবে এককেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। এসমস্ত মেলাগুলো তাদের মন মানসিকতাকে প্রফুল্ল করে। মোবাইল রেখে বন্ধুদের সাথে মেলায় যাওয়ার আনন্দটা উপভোগ করতে পারে তারা। এটি শুধু মেলাই নয় আনন্দের একটি প্রাণকেন্দ্র।