‘আমার আর বীজ কেনা লাগেনা’
নাচোল চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রন্জু আকন্দ
নাচোল উপজেলা কসবা ইউনিয়ন খরিবোনা গ্রামে ২০১৩ সালে বারসিক উচু বরেন্দ্র এলাকা খড়িবোনা গ্রামে ৭টি দেশি ধান জাত গবেষণার মধ্য দিয়ে শুরু হয় গবেষণা কার্যক্রম। স্থানীয় কৃষকদের সাথে নিয়ে এলাকার সমস্যা সম্ভাবনা চিহ্নিত করা হয়।
সমস্যা সমধানে উঠান বৈঠক, সভা অভিজ্ঞতা বিনিময়, বীজ বিনিময় ও কারিগরি সহায়তাসহ নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণ করে কৃষকদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সচেতন কৃষকরা তাদের বাড়ির উঠানে শাকসবজি উৎপাদন করতে শুরু করেন।
২০১৪ সালে শুরু হয় স্থানীয় দেশি জাতের বিভিন্ন শাকসবজি বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। এসব বীজ পরস্পরের সাথে বিনিময় করে চাষবাস করেন কৃষকরা। তারা গবেষণা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে খরাসহনশীল জাত নির্বাচন করেন। এই খরাসহনশীল জাত খড়িবোনাসহ ধীরে ধীরে ২২ গ্রামে বিস্তার লাভ করে। এসব গ্রামের মানুষ সবজি চাষসহ নানান ফসল ফলানোর চেষ্টা করেন তাদের জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে। এভাবে ২০২৩ সালে ৯ গ্রামের ৪০টি পরিবারে পুষ্টি বাড়ি সম্প্রসারিত হয়।
পুষ্টি বাড়িগুলোতে বিভিন্ন শাকসবজি চাষ, বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিনিময় করছেন গ্রামের নারী পুরুষ কৃষক। এই প্রসঙ্গে আঝইর গ্রামের রুপালি বেগম বলেন, ‘আগে আমরা বীজ সংগ্রহ করা বুঝি নাই। বারসিক’র বিভিন্ন উঠান বৈঠক ও সভা অংশগ্রহণ করে আমরা সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতা লাভ করি। ফলে এখন আমরা বীজ সংগ্রহ করি। আমি গত গ্রীস্মকালিন মৌসুমে এলাকার ৪০ পরিবারে ১০ ধরনের শাক সবজি বীজ বিনিময় করি। ১৮ ধরনের শীতকালিন শাকসবজির বীজ সংরক্ষণে আছে আমার। আমার বীজ কেনা লাগেনা।’
রুপালি আক্তারের মতো ৪০ বাড়িতে স্থানীয় জাতের শাকসবজি বীজ বাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বীজ বাড়িগুলো প্রতিনিয়ত বীজ বিনিময় করছে। বীজ বিনিময়ের ফলে পারষ্পারিক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে এবং নিরাপদ শাকসবজি উৎপাদন করে নিজের চাহিদা পূরণ করে বিক্রি করছেন বলে জানান রুপালি। খরিবোনা গ্রামের কৃষক আজিজ বলেন, ‘আমি নিজের বীজ থেকে ৮ ধরনের ফসল করেছি এবং ২০ জন কৃষককে বীজ দিয়েছি। আমি এখন সব মৌসুমের বীজ সংগ্রহ করি।’