ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হতে চান আমেনা খাতুন

সাতক্ষীরা থেকে মুকুন্দ ঘোষ

উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার প্রত্যান্ত গ্রাামের নারী আমেনা খাতুন (৩৩)। পিতা মাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে সেঝো মেয়ে তিনি। পারিবারিক কারণে (১৩) বছর বয়েসে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় তাঁর। আমেনা খাতুন ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করতে পেরেছিলেন। তাঁর স্বামীর নাম মহাসীন সরদার (৫৫) বছর। আমেনা খাতুনের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে লাইলি (১৮)। তার বিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়েটি পড়াশুনা করছে ক্লাস এইট পর্যন্ত। মেঝো মেয়ে রুবিও (১৭) বিয়ে হয়েছে। সে পড়াশুনা করছে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত। ছোট মেয়ে সাবিয়া (৭) দ্বিতীয় শ্রেণীতৈ পড়ালেখা করে।


আমেনা খাতুনের স্বামী কোন ভারী কাজ করতে পারেন না। তাঁর কোমরের হাড় ভাঙ্গা এবং একটা পায়ের সমস্যা। যে কারণে তিনি দাঁড়িয়ে কাজ করতে পারেনা মোটেও। তাই আমেনা খাতুনই সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তিনি রাজ মিস্ত্রীর জোগাড়ে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।


তবে আমেনা খাতুন নেটজ্ বাংলাদেশের আর্থিক সহাতায় বারসিক পরিবেশ প্রকল্পের খোলপেটুয়া সিএসও এর একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে যুক্ত হওয়ার পর কিছুটা আশার আলো দেখতে পান। তিনি পরিবেশ প্রকল্প থেকে ১২ হাজার টাকার ৪টি ভেড়া কিনে পালন করেছেন। ভেড়া ছাড়াও তিনি বীজ, গাছের চারা এবং হাঁস সহযোগিতা পান। বিগত এক বছর পালন করে তিনি বর্তমানে ৭টি ভেড়ার মালিক হয়েছেন।


আমেনা খাতুনের বসবাসের জায়গা বলতে তিন কাঠা জমি। এখানে এক পাশে আছে বসবাসের ঘর আর বাকি জায়গাটুকু সবজি চাষ করেন। কিন্তু মিষ্টি পানির অভাবের কারণে সবসময় সবজি চাষ করতে পারেন না। এখানে বর্ষার সময় বর্ষাকালীন সবজি যেমন ধুন্দল, মিষ্টি কুমড়া, কচুর মুখি, পুইশাক ও করোলা চাষ করেন। আর শীতের সময় লালশাক, পালংশাক, আলু টমেটো ইত্যাদি চাষ করে নিজের পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করেন এবং বাড়তি সবজিটুকু বিক্রি করে নিজের পরিবারের অন্যন্যো চাহিদা পূরণ করেন তিনি।


আমেনা খাতুন এখন স্বপ্ন দেখেন স্বামীর জন্য একটি মটর চালিত ভ্যান ক্রয় করার যাতে করে তাঁর পারিবারিক আয় বৃদ্ধিসহ সামাজিক সম্মান বৃদ্ধি পায়।

happy wheels 2

Comments