মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ড পেয়ে খুব খুশি সৌমিত্রা রানী

সাতক্ষীরা থেকে আব্দুল আলীম

উপকূলীয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মীরগাং গ্রামের গৃহিনী সৌমিত্রা রানী (২৪)। পড়ালেখার জন্য হাইস্কুলে প্রবেশ করলেও মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার সৌভাগ্য হয়নি তার। খুবই অল্প বয়সে বিয়ের পিড়িতে বসেন একই এলাকার দেবাশীষ মন্ডলের (৩০) সাথে। দেবশীষ মন্ডল পেশায় একজন দিনমজুর ও সুন্দরবনের মাছ কাঁকড়া আহরণকারী। এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ মোট ৪ সদস্যের ছোট সংসার তার। দৈনন্দিন আয়ের সাথে চলে তাদের জীবন ও সংগ্রাম। নিজস্ব জায়গা না থাকায় বাস করেন রাস্তার পাশে সরকারি খাস জায়গায় বাস করেন তারা।

২০২১ সালে অক্টোবর মাসে নেটজ পার্টনারশিপ ফর ডিভেলপমেন্ট জাস্টিস’র সহযোগিতায় বারসিক’র বাস্তবায়নে পরিবেশ প্রকল্প শুরু হলে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মীরগাং গ্রামে সুন্দরী সিএসও দলে যুক্ত হন তিনি। যুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিতভাবে সাপ্তাহিক দলীয় আলোচনায় সভায় অংশগ্রহণ করেন। কিছুদিন পরে বারসিক পরিবেশ প্রকল্প থেকে তার পারিবারিক ও ব্যবসায়িক উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল সম্পদ হিসেবে সেলাই মেশিন ও সীটকাপড় সহযোগিতা করা হয়। পরিবেশ প্রকল্প থেকে তাকে একই সাথে একটি কদবেল ও সবেদার চারা, কিছু বর্ষাকালীন বীজ ও দুটি মুরগি সহযোগিতা দেওয়া হয়। এরপর বারসিক এর নিয়মিত আলোচনা, প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সহযোগিতায় তিনি নিজেকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করার সুযোগ পান।

তিনি বারসিক পরিবেশ প্রকল্পের তাদের নিজেদের দলীয় সাপ্তাহিক মিটিং এ উপস্থিত থেকে বিভিন্ন আলোচনায় যুক্ত হন। বারসিক থেকে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেবা সম্পর্কে যার মধ্যে মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ড ইস্যুর আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমি তো গর্ভবতী, আমি কি আবেদন করতে পারব? এবং সেটি কখন কিভাবে করতে হবে?’ আলোচক এফএফও সভানেত্রী অনিতা রানি তাকে খুব দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে অনলাইন আবেদন করতে বলেন। এরপর সৌমিত্রা রানি স্বামীকে সাথে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যান এবং অনলাইনে আবেদন করেন। কিছুদিন পরে তার মোবাইলে একটি এসএমএস আসে এবং সে জানতে পারেন তার মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তিনি উক্ত সেবাটি পান। এখন প্রতি তিনমাস পরপর তিনি মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে ভাতার টাকা পান।

সৌমিত্রা এ বিষয়ে বলেন, “বারসিক’র পরিবেশ প্রকল্পের সাপ্তাহিক আলোচনায় উপস্থিত না থাকতে পারলে আমি এই সেবা সম্পর্কে জানতান না আর পেতাম না। আমার সন্তানের খরচ চালাতে আমার খুব বেশি কষ্ট হচ্ছেনা। আমি পরিবেশ প্রকল্পের সদস্য হতে পেরে খুব আনন্দিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইউপি সদস্য বলেছেন এই ভাতা কার্ডে আমি ৩২ হাজার টাকা পর্যন্ত পাব।”

happy wheels 2

Comments