মানিকঞ্জের প্রবীণ কৃষকরা এখনও আউশ ও আমনের জাতের ধান করেন
ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার
প্রতিবছর বর্ষার জলে প্লাবিত হয় নিম্ন এলাকা গাংডুবী। বর্ষার জলে জমিতে আসে পলি মাটি। এর ফলে জমি হয়ে উঠে উর্বর। যার ফলে ফসল উৎপাদন ভালো হয়।
ঘিওর উপজেলার গাংডুবী গ্রামে প্রাচীনকাল থেকে আউশ ও আমনের জাতের ধান আবাদ হয়। বাপ-দাদার আমলের চাষাবাদ এখনো ধরে রেখেছেন সাহেব আলী (৫৯) ও লাল মিয়া (৬১)। তারা স্থানীয় জাতের ধান এখনও চাষ করে চলছেন। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও তারা আউশের পরাংগী জাতের ধান ৫০ শতাংশ জমিতে চাষ করেন। গত বছর হঠাৎ বর্ষার জল আসার কারণে আউশের হাসা কুমড়া ও কালামানিক জাতের ধান নষ্ট হয়ে যায়। তবে বারসিক’র সহায়তায় এ বছর পরাংগী জাতের ধান চাষ করেন তাঁরা। এ ধান চাষ করে বর্ষার জল আসার আগেই তাঁরা ঘরে ফসল তুলে নিতে পারেন।
এই প্রসঙ্গে গাংডুবী কৃষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল কুমার মন্ডল (৭২) বলেন, গাংডুবী অঞ্চল নিম্ন এলাকা বলে এখানে গভীর জলের ধান জুলদিঘা, মুল্ল্যা দিঘা, দিঘা, ভ্যাওয়াল্যা, কইতুরমনি, বাড়ইঝাঁক, হিজল দিঘা ধান চাষ হয় এবং আর আউশের মধ্যে পরাংগী, কালামানিক ও সাইট্যা ধান চাষ হয়।’
আউশ ও আমন মৌসুমের ধান চাষ করতে কৃষকদের কোন রাসায়নিক সার প্রায়োগ করতে হয় না। প্রকৃতির উপর নির্ভর করে ফসল ফলাতে পারেন। এলাকার প্রবীণ কৃষকদেও মতে, আউশ ও আমনের জাতের ধানের কদর এখনো কমেনি। আউশ ধান দিয়ে চিড়া, মুড়ি, খিচুরি, ও পান্তা ভাত ভালো ও সুস্বাদু হয় বলে তাঁরা জানান।
বোরো ধানের কারণে বর্তমানে আউশ ও আমন মৌসুম জাতের ধান চাষ কিছুটা কম চাষ হলেও নালী ইউনিয়নের কুন্দরিয়া ও হেলাচিয়া গ্রামের মাঠে এখনো বোনা আউশ ও আমন জাতের ধান চাষ হয়। এই বিষয়ে কুন্দরিয়া কৃষক সংগঠনের সভাপতি সুবল সরকার (৭০) বলেন, আমরা এখনো বাপ-দাদার আমলের চাষকে টিকিয়ে রেখেছি।’ অন্যদিকে হেলাচিয়া কৃষক সংগঠনের সভাপতি কিতাব আলী (৫৫) বলেন, ‘বর্ষা যদি ধীর গতি চলমান থাকে তাহলে এই অঞ্চলে স্থানীয় জাতের আউশ ও আমনের ধান কৃষকের জমিতে টিকে থাকবে।’