স্বরুপপুর গ্রামে গড়ে উঠেছে এগ্রোইকোলজি লার্নিং সেন্টার
মানিকগঞ্জ থেকে মো: মাসুদুর রহমান
মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বায়রা ও তালেবপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে ২০২২ সাল থেকে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে রাসায়নিক কীটনাশকের দুষ্টচক্র ও রাসায়নিক ব্যবহারে কৃষি বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গ্রাম সভা, কৃষি প্রাণবৈচিত্র্য মূল্যায়ন, সরেজমিনে ফসল উৎপাদনে জৈব ও অজৈব পদ্ধতির তুলনামূলক পার্থক্য, কৃষি প্রতিবেশ বিদ্যা চর্চায় প্রদর্শনী প্লট, ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি, কৃষি প্রতিবেশ বিদ্যা বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালা ও ফসলের অনিষ্টকারী পোকা দমনে জৈব বালাইনিবারক তৈরি বিযয়ক হাতে কলমে প্রশিক্ষণসহ ইস্যুভিত্তিক ক্যাম্পেইন অব্যাহত আছে।
বাযরা ইউনিয়নের স্বরুপপুর গ্রামের আরতী রানী বেপারীর বাড়িতে শুরু থেকে স্বরুপপুর, সানাইল, চর জামালপুর, চারাভাংগা গ্রামের কীটনাশক বিরোধী সামাজিক আন্দোলনের কৃষক কৃষাণীরা কাজের ধারাবাহিকতায় জমায়েত হয়ে থাকেন। পাশাপাশি সিংগাইর উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের একাধিকবার উপস্থিতিতে তৃণমূল পর্যায়ের এই বাড়িটি প্রায়োগিক কৃষি গবেষণা ও কৃষি প্রতিবেশ বিজ্ঞান চর্চার প্রাণকেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠায় ২০২২ সালের ৩ আগস্ট সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিসার এগ্রোইকোলজি লার্নিং সেন্টারের শুভ উদ্বোধন করেন।
লার্নিং সেন্টারের আহবায়ক নমিতা কীত্তুনিয়া জানান, ১২ জন কৃষক ও ৯ জন কৃষাণীর ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় জাতের সবজি বীজ, ধান ও মসলার বীজ বিনিময় হচ্ছে, উপসহকারী কৃষি অফিসার এই সেন্টারে নিয়মিত আসায় আগের চেয়ে এলাকায় কৃষি প্রণোদনার পরিমাণ বেড়েছে।
মিতু রানী বলেন, ‘এই সেন্টারে বিভিন্ন লিফলেট, পোস্টার, প্রশিক্ষণ মডিউলসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মোবাইল নম্বর দিয়ে তথ্য সমৃদ্ধ করা হয়েছে এবং গোবর সার তৈরির সেড নির্মাণ ও ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন অব্যাহত আছে। এছাড়া এই লার্নিং সেন্টার হতে প্রস্তুতকৃত জৈব বালাই নিবারক/ উপকরণ বিনামূল্যে এলাকার কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।’ নূরনাহার বেগম বলেন, এই সেন্টার কে কেন্দ্র করে এখানে সারাবছর নানা ধরনের শাকসবজি উৎপাদন করা হচ্ছে বর্তমানে এখানে সাজিনা, পেঁপে, চাল কুমড়া, বেগুন, ধুন্দুল, মরিচ, শসা, পুইশাক, করলা, ডাটার আবাদে নানা সমস্যায় ও নিয়মিত পরিচর্যায়, চর্চিত কৃষি প্রতিবেশ বিদ্যার নানাবিধ স্থানীয় প্রযুিক্ত কৃষক কৃষাণী পর্য়ায়ে হস্তান্তর হচ্ছে।’
স্থানীয় কৃষক দশরথ সন্ন্যাসী বলেন, ‘আগে আমরা এক জায়গায় বসে কৃষির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতামনা, যে কোন সমস্যায় কীটনাশকের দোকানে গিয়ে কথা বলতাম ও সমাধান চাইতাম। এখন আমাদের বসার জায়গা হয়েছে। লার্নিং সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা এখন ৩/ ৪ ধরনের জৈব বালাই বানাইতে পারি এবং পোকা ও রোগের আক্রমণে ব্যবহার করছি। এই সেন্টারটি এলাকার কৃষক কৃষাণীদের মাঝে তথ্য, জ্ঞান, ধ্যান, ধারণা ও নানাবিধ কৃষি উপকরণ আদান প্রদানের মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরির সূচনা করেছে।