নিজের হাতের বীজের সাথে অন্য কোন বীজের তুলনা হয় না
কলমাকান্দা নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা
“গ্রামীণ নারীরা বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মুখোমুখী” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের তারানগর গ্রামে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে বীজ মেলা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বারসিক’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বীজমেলা আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন শর্তবর্ষী প্রবীণ ব্যক্তিত্ব লেবিংসন নকরেক। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা বদিন জাম্বিল।
গ্রামীণ নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বীজ মেলায় ১৮ জন কৃষাণী তাদের সংরক্ষণকৃত বীজগুলো প্রদর্শন করেন। সর্বোচ্চ বীজ সংরক্ষণকারী তেনিফা রংদী। তিনি মোট ৩৩টি বৈচিত্র্যময় সব্জি বীজ প্রদর্শন করেন। মেলায় ৭ জন কৃষাণীর মাঝে ১২ জাতের সব্জি বীজ বিনিময় হয়েছে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীরমুক্তি যোদ্ধা বদিন জাম্¦িল বলেন, ‘‘উঠান ভরা লাউ শসা, খনা বলে লক্ষীর দশা, গ্রামীণ নারীরা বাড়ির অঙ্গিনায় যেসব শাকসব্জি উৎপাদন করে সবার জন্য খাদ্য উৎপাদন করেন তাদের প্রতি আমাদের সম্মান প্রদর্শন করা উচিৎ। আমি নিজেও আমার বাড়ির আঙ্গিনায় শাকসব্জি উৎপাদন করি, বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। নিজের হাতের বীজের মত হয় না। গ্রামীণ নারী দিবসে যারা এখানে এসেছেন তারা প্রত্যেকে বীজ রাখেন এটা খুবই ভালো কথা। কিন্তু বীজ রাখার সংস্কৃতি বৃদ্ধি করতে হবে যদি আমরা নিজেদেরকে কৃষক বলে দাবি করি।’
মোছা: জোস্না আক্তার বলেন, ‘আমরা নিজেরা যাদি বীজ রাখি তবে আগাম বীজ রোপণ করতে পারি এতে করে ফলন আগাম পাবো এবং ভালো দামে বিক্রি করতে পারি। যার জন্য আমি নিজে বীজ রাখি এবং অন্য কেউ উদ্বুদ্ধ করি।
উল্লেখ্য জনগোষ্ঠীকে বীজ সংরক্ষণ আরো গতিশীল ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বারসিক’র সহযোগিতায় এবং মিকরাকা নারী সংগঠনের উদ্যোগে তারানগর গ্রামে ২০২২ সালে স্থাপন করা হয় কমিউনিটি বীজ ব্যাংক। কমিউনিটি বীজ ব্যাংকে বর্তমানে ২৫ জাতের ধান বীজ সংরক্ষণ করা আছে। তারানগর কমিউনিটি বীজ ব্যাংক থেকে এ পর্যন্ত ৭টি গ্রামে ৯৭টি পরিবারকে মৌসুমভিত্তিক বিভিন্ন জাতের শাকসব্জি ও ধানের বীজ সহযোগিতা করা হয়েছে।