‘মাথাপিছু আয় বাড়লেও ধনী ও দরিদ্রের মাঝে বৈষম্য বেড়েছে’-বিজয় উৎসবে বক্তারা
বারসিকনিউজ ডেস্ক
বারসিক এবং নিম্ন আয়ের মানুষের উদ্যোগে “স্বাধীনতার ৫১ বছরে প্রত্যাশা ও বৈষম্যমূলক নগরে নি¤œ আয়ের মানুষের সংকট বিষয়ক সংলাপ” শীর্ষক বিজয় উৎসব-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। গত ১২ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বধ্যভূমি শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, মোহাম্মদপুর, ঢাকায় এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বস্তিবাসী অধিকার সুরক্ষা কমিটির সভাপতি হোসনেআরা বেগম রাফেজা সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৩৩ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ সরকার। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী ও পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুস সোবহান, বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ^াস, কাপ’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান-ইয়াত এবং লালমাটিয়া হাউজিং স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ আকমল হোসেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারসিক’র সমন্বয়ক মো: জাহাঙ্গীর আলম এবং সঞ্চালনা করেন বারসিক’র পরিচালক পাভেল পার্থ।
আলোচনায় প্রকৌশলী মো: আব্দুস সোবহান বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ নি¤œ আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে কিন্ত ধনী ও দরিদ্রদের মাঝে আকাশ সমান বৈষম্য বেড়েছে। এই বৈষম্য গ্রামের চেয়ে নগরে আরো অনেক বেশি।’ কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ সরকার বলেন, ‘নগরের বস্তিবাসী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এইসব মানুষের পাশে সরকারি সাহায্য দেওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করা হয়। কম খরচে টিসিবির মাধ্যমে বস্তিবাসীদের মধ্যে স্বল্প খরচে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এছাড়া বস্তিতে বসবাসরত প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকা শহরে দরিদ্র মানুষ বেশি বসবাস করলেও সরকারী ত্রাণ শহরের চাইতে গ্রামে বেশি সরবরাহ করা হয়। যে কারণে ঢাকায় বস্তিতে বসবাসকারী সবাইকে ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয় না।’
অনুষ্ঠানের ধারণাপত্রে বলা হয়, মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়লেও একইভাবে বেড়েছে ধনী এবং দরিদ্রদের মধ্যে অকাশ সমান বৈষম্য। একটি রাষ্ট্রের জন্য এই বৈষম্য মোটেও সুখকর নয়। এই বৈষম্য গ্রামের চেয়ে নগরে আরও অনেক বেশি। নগরের নি¤œ আয়ের বস্তিবাসী মানুষেরা প্রাকৃতিক দুযোগ ও জলবায়ু পরিবতনের কারণে সবকিছু হারিয়ে নগরে এসে কোনমতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রাম এলাকায় দারিদ্রের হার ২৬.৪% হলেও সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ৩৫.৭% ভাগ মানুষকে যুক্ত করা হয়েছে। একই ভাবে শহরাঞ্চলে দারিদ্রের হার ১৮.৯ ভাগ হলে সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে যুক্ত করা হয়েছে মাত্র ১০.৯ ভাগ মাুনষকে। ফলে দরিদ্রদের দুষ্টচক্র থেকে তাদেরকে বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, বিজয় উৎসবের শুরুতে বস্তি এলাকায় বসবাসকারী শিশুরা চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীসহ সকল শিশুরা খুব সুন্দর করে ছবি আঁেক। এছাড়া বস্তি এলাকার শিশু ও কিশোরীরা গান, নৃত্য ও যেমন খুশি তেমন সাজো অংশগ্রহণ করে।