কৃষিপণ্যের উপযুক্ত দাম যদি না পাই তাহলে আর কৃষিকাজ করবো না

কৃষিপণ্যের উপযুক্ত দাম যদি না পাই তাহলে আর কৃষিকাজ করবো না

সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান

কৃষকের অধিক পরিশ্রম ও কৃষি বিভাগের কারিগড়ি সহয়াতায় মানিগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় ধানের অধিক ফলন হলেও ধানের নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অধিকাংশ কৃষক। অন্যদিকে শ্রমিক সংকট ও উৎপাদন খরচের সাথে বিক্রয় মূল্যের সামঞ্জস্য না থাকায় বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে সিংগাইরের কৃষকগণ। প্রতি মণ ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হচ্ছে ৮শ’ পঞ্চাশ থেকে ৯০০ টাকা কিন্তু স্থানীয় বাজারে ধানের বিক্রি মূল্য হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। কৃষকের এই ক্ষতি পুশিয়ে দেওয়ার জন্য সরকার সারা দেশে সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয়ের জন্য জেলাভিত্তিক বরাদ্দ দিয়ে থাকেন।

IMG_20190527_111036
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলিত বোরো মৌসুমে ধান রোপণ হয়েছে ৪৭৪৩০ হেক্টর জমিতে এবং ধানের সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ২,৩৭,১৫০ মেট্রিক টন । অন্যদিকে মানিকগঞ্জ জেলায় ধান ক্রয়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ১৬৪২ মেট্রিক টন যা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। সরকার ধান ক্রয়ের নিধারিত মূল্য ১০৪০ টাকা ঘোষণা করলেও কৃষকের কাছে সেই বার্তা পৌছাচ্ছে না এবং প্রকৃত কৃষক এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেটে তৈরি করে কৃষকের প্রকৃত অধিকার হরণ করে তারা নিজেরাই লাভবান হচ্ছেন।

তাই জেলার বরাদ্দ থেকে উপজেলাভিত্তিক বণ্টন অনুযায়ী মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য থেকে বেরিয়ে এসে সরাসরি খোদ কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয় ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্রয় কেন্দ্র চালূকরণের দাবিতে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি অফিস বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করছেন বলধারা, ইউনিয়ন,বায়রা, ইউনিয়ন এবং সিংগাইর উপজেলা কৃষি উন্নয়ন ও জেলাকৃষি উন্নয়ন সংগঠন। মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি মো. করম আলী মাষ্টার, সিংগইর উপজেলা কৃষিউন্নয়ন সংগঠনের সহসভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. ইমান আলী, বলধারা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি মো. হয়রত আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন, বায়রা ইউনিয়ন কৃষিউন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি মো. ফরহাদ হোসেনসহ দেড় শতাধিক কৃষক কৃষাণীর স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি জমা দেন।

IMG_20190527_111033
এই প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি মো. করম আলী মাষ্টার বলেন, ‘আমরা কৃষক অনেক আশা কৃষিকাজ করি এবং ধানের আবাদ করি। এই ধান বিক্রি করেই আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে হয়। যদি কৃষি কাজের উপযুক্ত দাম না পাই তাহেল কৃষি কাজ আর করবো না।’ সিংগাইর উপজেলা কৃষিউন্নয়ন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমান আলী বলেন, ‘কৃষকরা ধানের সঠিক মূল্য না পেলে কৃষিকাজে ধানচাষে অনাগ্রাহ তৈরি হবে। ধানচাষ টিকিয়ে রাখতে হলে কৃষকের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।’ সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা টিপু সুলতান স্বপন কৃষকদের আস্বস্ত করে বলেন, ‘কৃষকের ক্ষতি পোষনোর জন্য সরকার ধান ক্রযের যে মুল্য ঘোষণা করেছে সরকার নির্ধারিত সেই মূল্যেই আপনাদের কাছে থেকে ধান ক্রয় করা হবে। আপনার খাদ্য অফিসে পরীক্ষার জন্য ধানের নমুনা নিয়ে আসবেন। আমরা পরীক্ষা করে আপনাদের কাছ থেকেই ধান ক্রয় করবো।কেউ যদি আপনাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে অনাগ্রাহ দেখায় তাহলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

happy wheels 2

Comments