মমতা রানীর স্বপ্ন

গোপাল চন্দ্র সরকার, আশাশুনি (খাজরা) সাতক্ষীরা
মমতা রানী বৈরাগী আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর পাশে বসবাস করেন। স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে অভাবের সংসার তাঁর। নদীতে মাছ ধরে কোনমতে সংসার চলে। দিন এনে দিন খাওয়া সংসারে দুই সন্তানকে ঘিরে বড় স্বপ্ন দেখেন মমতা রানী। স্বপ্ন পূরণের জন্য ছেলেমেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার ইচ্ছা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্নমূখী আয় দিয়ে সংসারের স্বচ্ছলতা আনতে চান তিনি।


লবণাক্ততার কারণে এলাকায় কোন কাজ না থাকায় স্বামী-স্ত্রী দুজনই বাড়ির পাশের নদীতে অন্যের নৌকা ও মাছ ধরার উপকরণ ভাড়া নিয়ে মাছ ও মাছের রেনু সংগ্রহ করেন। তবে এ থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে ৪ জনের সংসার চালানো দায় হয়ে যায়। এর মধ্যে ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ ও পারিবারিক অন্যান্য খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিলো। তবে তাঁর অভাব দূর হতে বেশি সময় লাগেনি।

২০২২ সালের শুরুতে নেট্জ বাংলাদেশ ও বারসিক’র পরিবেশ প্রকল্পের পশ্চিম খাজরা সিএসও সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর মাছ ধরার জন্য জাল-নেট-কাচি এবং দুটি ছাগল সহযোগিতা পান। তা থেকে জাল-নেট দিয়ে নদীতে মাছ ধরে দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় করে। সেটা আগে জাল ও নৌকা ভাড়ায় অর্ধেক টাকা খরচ হয়ে যেতো। কিন্তু পরিবেশ প্রকল্প থেকে সহযোগিতা পাওয়ার পর সেই খরচটি আর হচ্ছে না। ফলে সংসার ও ছেলে মেয়ের পড়াশুনায় খরচ করতে পারছেন। এখন মমতা রানীর ছেলে মেয়ে কলেজে পড়ালেখা করছে।

মমতা রানী জানান, সহযোগিতা পাওয়া দুটি ছাগল থেকে বর্তমানে ৫টি ছাগল হয়েছে তাঁর। তিনি প্রকল্প থেকে পাওয়া জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করছেন। সহযোগিতা পাওয়া ৩টি মুরগি ডিম পারছে। এর ফলে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কিছু আয়ও হচ্ছে। এখন মমতা রনাী স্বপ্ন দেখেন আরো বড় হওয়ার। ছাগলের পাশাপাশি গাভী পালন করতে চান। নিজের একটি নৌকা কিনতে চান। সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান।

happy wheels 2

Comments