বৃক্ষরোপণে তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে হবে
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে সম্প্রতি এক হাজার ফলজ ও ঔষুধি গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব চারা জয়পুর, সেলিমপুর, হরিহরদিয়া, পাটগ্রামচর, গঙ্গাধরদি গ্রামের স্কুলের শিক্ষার্থী, কৃষক-কৃষাণীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় এবং এসব মানুষেরা তাদের স্ব স্ব জমিতে রোপণ করেছেন। চরাঞ্চলে মানুষের মধ্যে বৃক্ষ রোপণে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করতে বারসিক এসব চারা সহযোগিতা করেছে। গাছের চারাগুলোর মধ্যে রয়েছে আমড়া, পিয়ারা, কদবেল, জলপাই, লেবু, মেহগনি, বহেরা, নিম, দেশী কড়াই প্রভৃতি।
প্রতিবছর বন্যা, খরা, ঝড় ও নদী ভাঙনের ফলে চরাঞ্চলে গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। পরিবেশের উপর পড়ে এর প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা, পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরুণ, স্থানীয় জাতের ফলজ গাছ রোপণে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য বৃক্ষ রোপণের এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
বৃক্ষ রোপণের গুরুত্ব নিয়ে সচেতনমুলক আলোচনা সভা আলোচনা আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জয়পুর গ্রামের সমাজ সেবক আব্দুর রাজ্জাক, জয়পুর আদর্শ কিন্ডার গার্টেন শিক্ষক সুমি আক্তার, বারসিক কর্মকর্তা মুকতার হোসেন।
আলোচনায় সমাজ সেবক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চরাঞ্চলে আমাদের বসত বাড়িতে ফলজ গাছের সংখ্যা খুবই কম। তাছাড়া প্রতিবছর বন্যার কারণে অনেক গাছপালা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে হাট-বাজার থেকে আমাদের ফলমুল কিনে খেতে হয়। আর যদি আমরা নিজেদের বসতবাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ ও ঔষুধি গাছ লাগোতে পারি তাহলে একদিকে আমরা নিজেদের বাড়িতে উৎপাদিত ফলমুল থেকে পারব। অন্যদিকে বাজার থেকে আমাদের টাকা খরচ করে কিনতে হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বৃক্ষ আমাদের বন্ধু। এর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। বৃক্ষ রোপণে তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে হবে। আজকের যারা তরুণ প্রজন্ম তাদের গাছ রোপণের বিষয়ে সচেতন করতে হবে।’
শিক্ষক সুমি আক্তার বলেন, ‘গাছ আমাদের পরিবেশ ভালো রাখে। গাছ পশুপাখির খাদ্য বসবাসের জায়গা তৈরি করে, খাদ্যর যোগান দেয়, অক্সিজেন দিয়ে সহায়তা করে। গাছকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটা, ডাল ভাঙ্গা, পাতা ছেড়া অন্যায় কাজ। এ সকল কাজ থেকে শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে হবে।’
বারসিক কর্মকর্তা মো. মুকতার হোসেন বলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জন্য বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিবছর যদি আমরা বেশি করে গাছ লাগাতে পারি তাহলে আরও সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারব। গাছ বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে আর অক্সিজেন ত্যাগ করে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এতে পরিবেশ সুস্থ ও নির্মল রাখে। আর অক্সিজেন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি।’
এখন বর্ষাকাল গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। এ সময় বৃষ্টিপাত হয়, মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলজ, বনজ গাছের পাশাপাশি ঔষুধি গাছের চারা লাগানোর ক্ষেত্রে চরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আলোচনায় চরাঞ্চলে প্রতিটি পরিবারে অন্তত তিনটি গাছ লাগানোর জন্য আহবান জানানো হয়।