উদ্বাস্তু বস্তিবাসী ও শ্রমজীবী নারীর আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন
রাজশাহী থেকে বরেন্দ্র প্রতিনিধি
রাজশাহী নগরীর রেলওয়ে কলোনী মাঠে দুর্যোগে উদ্বাস্তু বস্তিবাসী ও শ্রমজীবী নারীর উদ্যোগে গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, তরুণ সংগঠন বিআইইএস (বাংলাদেশ ইনোভেটিভ এডুকেশন সোসাইটি), নামোভদ্রা বাস্তুহারা উন্নয়ন সংগঠনের যৌথ আয়োজনে উদ্বোধনী ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বস্তির নারী নেত্রী পারভিন বেগম।
আলোচনা অনুষ্ঠানে দুর্যোগে উদ্বাস্তু বস্তিবাসী ও শ্রমজীবী নারীর জীবন ও কর্ম বিষয়ে গবেষণা ও প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরেন বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চল সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাজশাহীর বস্তির নারীদের নিরাপদ কর্মসংস্থান, নিরাপদ জ্বালানি, পয়োঃনিস্কাশন, স্বাস্থ্য সমস্যাসহ নিরাপত্তার দিকগুলো সমাধানে সরকারি ও বেসরকারি সকলের সমন্বিত উদ্যোগে সমাধান করতে হবে।’ বাংলাদেশ শিশু একাডেমী রাজশাহী জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মন্জুর কাদের বলেন, ‘নারী শিশুদের জন্যে শিশু একাডেমীতে লেখাপড়ার সুযোগ সুবিধা আছে। চাইলে যে কেউ সেই সেবা নিতে পারেবন।’
বস্তির নারীগণ বলেন, ‘বস্তির নারীরা সব থেকে বেশি অবহেলিত ও অরক্ষিত থাকে। সারা দেশে নারী দিবস পালন হয়, নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়। আর এদিকে আমরা বস্তির নারীরা মৌলিক চাহিদা থেকেই বঞ্চিত। আমাদের থাকার ঘর নেই, পয়োঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নেই, ল্যাট্রিন নেই, নিরাপদ মাতৃত্ব আমদের কাছে যেন স্বপ্ন।’ তারা আরও বলেন, ‘নগর পরিষ্কার করতে আমাদের অবদান অনেক। আমরা সারাদিন প্লাস্টিক, বোতলসহ কতো ধরনের আবর্জনা কুড়াই, সেগুলো বিক্রি করে কোনমতে সংসার চালাই। মানুষের বাড়িতে আয়ার কাজ করি, আবার অনেকে ভিক্ষা করি উপায়ন্তর না পেয়ে। নানাভাবেই আমরা বস্তির নারীরা ঝুঁকির মধ্যে দিন পার করি।’ বস্তির নারী মমিনা বেগম বলেন, ‘আমাদের সমস্যাগুলো যেন দ্রুত সমাধান করা হয় সেই দাবি জানাচ্ছি এই নারী দিবসে।’
অনুষ্ঠানে নারী দিবসের প্রেক্ষাপট এবং বস্তির নারীদের সমস্যা নিয়ে আরও বক্তব্য দেন বিআইইএস এর সভাপতি জয়নুল আবেদীন সবুর, এসিডির সমন্বয়কারী মিরাজ উদ্দিন, বারসিক এর কর্মসূচী কর্মকর্তা জাহিদ আলী।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে বস্তির নারীগণ আলোর পথে যাত্রা শুরু করেন। বস্তির নারীরা মনে করেন এই আলোর যাত্রার মধ্যে দিয়েই তারা নিজেকে আলোর পথে নিয়ে যেতে চান।