আমরা স্থানীয় বীজ চাষ ও সংরক্ষণ করবো
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে বিউটি সরকার
বাজার নির্ভরশীলতা কমানো এবং স্থানীয় জাতের বীজ বৃদ্ধি করা এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গতকাল সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে কৃষকদের আয়োজনে ও বারসিক’র সহযোগিতায় স্থানীয় জাতের বীজ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
কৃষাণী নুরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে ও বারসিক কর্মসূচি কর্মকর্তা বিউটি সরকারের সঞ্চালনায় উক্ত বীজ মেলার অনুষ্ঠানে ছিল স্থানীয় জাতের বীজের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা, স্থানীয় বীজ উপস্থাপন, কৃষক-কৃষক বীজ বিনিময় ও দেশীয় ফলজ গাছের চারা প্রদান।
মেলার শুরুতে বাড়িতে স্থানীয় জাতের বীজ সংরক্ষণের সুবিধা ও গুরুত্ব নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা উন্মুক্ত আলোচনা করেন। এ প্রসঙ্গে কৃষক হারুন বলেন, ‘আগে আমাদের বাড়িতে অনেক জাতের বীজ ছিল এবং বাড়িতেই বীজ রাখতাম। তাই ভালোমন্দ বুঝতে পারতাম। এখন বাজার থেকে বীজ কিনে আনি। ফলে ভালোমন্দ বুঝার উপায় থাকেনা।’ তবে তিনি বলেন, ‘কৃষকের সম্পদ হলো বীজ। এ সম্পদকে সংরক্ষণের মাধ্যমেই রক্ষা করা যাবে।’ কৃষাণী নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আমরা এখন বাড়িতে বীজ সংরক্ষণ কম করি। তাই দেশী বীজ কমে গেছে। বাড়িতে বীজ সংরক্ষণের সুবিধা হলো পোকামাকড়ের আক্রমণ কম লাগে। তাই সার, বিষ ছাড়া চাষ করা যায়। এছাড়া বীজ বাজার থেকে কিনতে হয়না। ফলে খরচ কম হয়।’
পরবর্তীতে অংশগ্রহণকারীরা তাদের বাড়িতে সংরক্ষিত স্থানীয় জাতের চিচিংগা, কালিজিরা,সরিষা, তিল, পুইশাক, ধান, পেপেঁ, লাউ, সীম, শশা, বরবটি, চালকুমড়া ও ধুন্দলসহ মোট ১৫ প্রকারের বীজ প্রদর্শন করেন এবং ১২ জন কৃষকের মাঝে বীজ বিনিময়ের মাধ্যমে কৃষকরা কৃষকদের হাতে স্থানীয় জাতের বীজ তুলে দেন। বীজ বিনিময় প্রসঙ্গে কৃষক কুদ্দুস আলী বলেন, ‘আগে গ্রামে একজনের কাছ থেকে অন্যজন বীজ বিনিময় করতো। ফলে প্রতিবেশীদের সাথে সুসর্ম্পক তৈরি হত। এখন বাজারনির্ভরশীল হওয়ায় তা কমে গেছে।’
পরিশেষে অংশগ্রহণকারীরা শপথ গ্রহন করে বলেন, ‘আমরা স্থানীয় বীজ চাষ ও সংরক্ষণ করবো এবং পরস্পরের সাথে বীজ বিনিময় করার মাধ্যমে স্থানীয় জাতের বীজ টিকিয়ে রাখবো।