মাহালি পাড়ার খাবার পানির অতীত ও বর্তমান চিত্র
রাজশাহী থেকে রিনা টুডু
রাজশাহী জেলার অর্ন্তগত তানোর উপজেলার আওতাধীন মুন্ডুমালা পাঁচন্দ মাহালি পাড়ার পৌরসভার ১নং ওয়াডের পাচন্দর মাহালী পাড়া গ্রাম। গ্রামটি তানোর আমনৃরা পাকা রাস্তার সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। গ্রামে ৫০টি আদিবাসী পরিবার বসবাস করে। লোকসংখ্যা ছোট বড় মিলে ২৫০ জন। সবাই ভূমিহীন, দিনমজুর। তাদের প্রধান পেশা বাঁশ বেতের কাজ। বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস যেমন সাজি, কুলা, সরপস, টিপা তৈরি এবং তা বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। মাহালি পাড়া গ্রামটিতে পানির সমস্যা প্রকট।
অতীতে গ্রামটিতে একটি কুয়া ছিল। এই কুয়া থেকে গ্রামের সবাই খাবার পানি তুলতো। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এই একটি মাত্র কুয়ো দিয়ে তাদের পানি চাহিদা মিটতো না। অনেকবছর ধরেই এই কুয়ার পানিই তারা ব্যবহার করে আসছেন। তবে কোনো এক কারণে কুয়ার পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পানি সঙ্কট আরও প্রকট আকার ধারণ করে। গ্রামের মানুষ খাবার পানির সংকট মেটাতে দূর দূরান্তে থেকে পানি সংগ্রহ করত। এ সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রামের কয়েকটি পরিবার উদ্যোগ নিয়ে গ্রামে একটি তারা পাম্প বসিয়েছিল। কিন্তু তাদের পানি সঙ্কট এখনও রয়েগেছে।
এ সঙ্কট দূর করার জন্য মুন্ডুমালা পৌরসভা থেকে একটি মটার দেওয়া হয়েছিল। সেই মটর পাঁচ বছরের মতো ব্যবহার করার পর নষ্ট হয়েগেছে। গ্রামের মানুষ উদ্যেগ নিয়ে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী গ্রামে নতুন আরেকটি মটর বসান। কিন্তু সেটিও নষ্ট হয়। এরপর থেকে গ্রামের মানুষ দূর দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে যান। অনেকে পাশের এলাকা থেকে টাকার বিনিময়ে পানি সংগ্রহ করেন। কেউ কেউ মাসে ১০০ টাকা করে খরচ করেন পানির পিছনে। দরিদ্র পরিবারের জন্য এটি বড় ধাক্কা।
অন্যদিকে অতীতে গ্রামের মানুষ পুকুরের পানি দিয়ে রান্নার কাজ সারতো। শুধু খাওয়ার জন্য খাবার পানি সংগ্রহ করত। খাবার রান্না থেকে গৃহস্থালির সব কাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করতো। অতীতে পুকুরের পানিতে কোনো কীটনাশক বা অন্য কিছু দিতো না। পুকুরের পানিতে গোসল করলেও তাদের কোনো অসুখ বিসুখ সে রকম দেখা দেয়নি। বাচ্চাদেরও কোনো রকম অসুখ বিসুখ দেখা দেয়নি।
তবে বর্তমানে পুকুরের পানি দিয়ে রান্না করা তো দূরের থাক গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করা যায় না। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক দেওয়ায় পুকুরের পানি ব্যবহারে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। কিন্তু বিকল্প কোন উৎস না থাকায় গ্রামের মানুষকে পুকুরের পানি দিয়েই রান্নাবান্না ও গোসলের কাজ সারতে হয়। এতে শিশুদের অসুখ বিসুখ দেখা দিয়েছে। নারীদের ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। দূষিত পুকুরের