নদীতে পানি কম অন্য পেশায় মানুষ

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
‘ফাল্গুন চৈত্র মাসে গাংগে অনেক পানি অনেক থাকত। এনহে নদীর মাঝহানে নৌকা নিয়ে চলতে গেলে ঠেহ্যা যায় নৌকা। মাছ ধরা অনেক জ্যালা অন্য কাজ কর্ম করে খাচ্ছে।’ কথাগুলো বলেছেন আন্দারমানিক গ্রামের মৎস্যজীবী ইউসুব আলী। তিনি সারাবছর পদ্মা নদীতে মাছ ধরেন। কিন্তু চলতি বছরে পানি বেশি কমে গেছে। পদ্মা নদীর মাঝে মাঝে চর জেগে উঠেছে। নদীর গভীরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে নদীতে মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী দেখা মিলছে না। হরিরামপুর উপজেলার মৎস্যজীবীরা নদীতে মাছ কম পাওয়ার কারণে অন্য পেশায় যেমন অটোবাইক চালানো, কৃষিকাজ, মিস্ত্রি কাজ, দিনমজুর কাজে সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে হরিরামপুর চরাঞ্চল পাটগ্রামচরের কৃষক মাইনুদ্দিন জানান, এ বছর নদীতে পানি কম। ২ কিলোমিটার ধরে চর জেগে উঠার কারণে তারা নদীর পানি দিয়ে সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারছেন না। গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে। ফলে কৃষি চাষাবাদে খরচ অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। নদীতে পানি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তারা মনে করেন নদীর গভীরতা দিন দিন কমে যাওয়া, বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন বেশি হওয়া। নদীতে পানি কমে যাওয়ার কারণে বিপাকে পড়ছেন কৃষকরা। কারণ তাদের গরু, ছাগল সাঁতরানো নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। বসতবাড়ি থেকে এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গিয়ে গরু বাছর সাঁতরাতে হয়। অনেক মানুষ টিউবওয়েলে পানি দিয়ে গরুকে বাছুর গোসল করাচ্ছে।


উল্লেখ্য যে, হরিরামপুর স্বেচ্ছাসেবক যুব টিম ও বারসিক’র সহযোগিতায় হরিরামপুর পদ্মা নদী আন্ধারমানিক ঘাট পর্যটকদের ফেলানো খাদ্যর প্যাকেট, পানি বোতল, চিপস, পলিব্যাগ পরিস্কার অভিযান পরিচালনা করে আসছে। হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম সরাসরি উক্ত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় তিনি তুলে ধরে বলেন, ‘যুবকদের পরিবেশ ও নদী রক্ষায় পরিস্কার পরিচ্ছনতা অভিযান অবশ্যই প্রশংসণীয়। মানুষকে আমাদের সচেতন করতে হবে। নদীকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। নদীর সাথে মানুষের জীবনের সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্ক রয়েছে আমাদের বেঁচে থাকার। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

happy wheels 2

Comments