সাম্প্রতিক পোস্ট

পুষ্টিগুণে ভরা অচাষকৃত ঘেটকুল

পুষ্টিগুণে ভরা অচাষকৃত ঘেটকুল

সাতক্ষীরা থেকে নুরুল হুদা

ঘেটকুল। এটি একটি অচাষকৃত শাক। নানা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ঘেটকুল বিভিন্ন বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয়। দেশের প্রায় সব জায়গায় এ শাক পাওয়া যায়। বর্তমানে বিভিন্ন শাকের তালিকায় ঘেটকুল জায়গা করে নিচ্ছে।

সাতক্ষীরাতে এটি ঘেটকুল নামে পরিচিত হলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। কেউ এটিকে ঘেট কচু বা ঘের কচু নামেও ডাকা হয়। আদিবাসী চাকমা স¤প্রদায় ঘেটকুলকে খারকন, খারবাস বা খারাকেও বলে। গাড়ো স¤প্রদায় এটিকে কালমান বলে।

20180513_125615

মুক্তকোষ উইকিপিডয়ার তথ্যমতে, ঘেটকুল এর বৈজ্ঞানিক নাম Typhonium trilobatum। এটি Araceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। ঘেটকুল প্রধানত শাক হিসেবে খাওয়া হয়। ঘেটকুল নানা রোগের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। ঘেটকুল শাকের গাছের ডাটা লম্বা হয়। পাতা গাড় সবুজ রং। ডাটার রং কিছুটা খয়েরি। পাতা দেখতে তিন কোনা খাজ কাটা হয়। লাল রং এর ফুল হয়। ফুল দেখতে অনেকটা কলমের মত।
গরুর শরীরে ঘা হলে গাড়ো স¤প্রদায়ের মানুষ এই শাকের শিকড় মিহি করে বেটে পেষ্ট তৈরি করে সেখানে ব্যবহার করে।

দেশের সবজায়গায় ঘেটকুল জন্মালেও চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, টাংগাইল, সিলেটে এই শাক বেশি পাওয়া যায়। বর্তমানে বিভিন্ন জেলাতে বাণিজ্যিকভাবে ঘেটকুল চাষ করা হচ্ছে।

ঘেটকুল শাকের ডাটাসহ পাতা রসুন কালোজিরা, শুকনা মরিচ ভেজে শিল পাটায় বেটে ভর্তা করে খাওয়া হয়। এছাড়া অনেকে ডাটা ছোট ছোট করে কেটে ভেজে শুঁটকি মাছ দিয়ে রান্না করে খায়। নারকেল দুধ বা নারকেল কুড়ানো দিয়ে চিংড়ি মাছ দিয়ে এ শাক রান্না করা হয়। শুটকি দিয়ে ঘেটকুল শাক খাওয়া হয় দেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে। সাতক্ষীরাতে ঘেটকুল ভাজি, নারকেল দিয়ে রান্না, ও শাক হিসেবে খাওয়া হয়।

20180513_125639

সাতক্ষীরার পুষ্টির ফেরিওয়ালা রুহুল কুদ্দুস রনি বলেন, “ঘেটকুল একটি পুষ্টিকর খাবার। অচাষকৃত এ শাক আগে বাগান থেকে সংগ্রহ করলে ও বর্তমানে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে ঘেটকুল চাষ করছে। সেখান থেকে ক্রয় করে বিক্রি করছে।”

সাতক্ষীরা মসলা ভান্ডারের হেকীম মো. আবুল কাশেম বলেন, “কলার সাথে ঘেটকুল খেলে পাকস্থলীর সমস্যা ভালো হয়ে যায়। গর্ভবতী মায়েদের ঘেটকুল খেলে শরীরের পুষ্টি ও আয়রনের ঘাটতি কমায়।”

নানাবিধ পুষ্টিগুণ থাকায় অচাষকৃত এই শাক দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে। মানুষের চাহিদা বেশি থাকায় এখন শহরের বাজারগুলোতে ঘেটকুল লক্ষ্যণীয় হারে বিক্রি হচ্ছে।

happy wheels 2

Comments