অন্ধকার থেকে আলোয়: পশ্চিমবঙ্গের সুকুমারীর অভিজ্ঞতা এ দেশেও ভূমিকা পালন করতে পারে

বর্তমান বিশ্বে জ্বালানি ও পরিবেশ নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা ও হই চই হচ্ছে । এর সাথে অনেক বেশি যে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় তা হলো নবায়নযোগ্য জ্বলানি। সঙ্গত কারণেই তা হওয়া দরকার এবং এ জন্যেই তা হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বলানি নিয়ে যেমন বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়িত নতুন নতুন উদ্ভাবন হচ্ছে। আবার বিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বলানিতে কোন দেশ এগিয়ে তা নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন ও জরিপ হচ্ছে প্রতি মূহুর্তে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে কেন্দ্র করে নানামূখী উন্নয়ন কর্মসূচি এবং বাণিজ্যও সৃষ্টি হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে কেন্দ্র করে বিশ্বে রাজনীতিসহ অধিকার আর অধিকারহীনতার দিকগুলো বর্তমান সময়ে জোরেসোরে আলোচনা হচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি- অধিকার অধিকারহীনতা এবং কারিগড়ি দিকগুলো জানতে সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অভিজ্ঞতা সফরের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। উক্ত অভিজ্ঞতা বিনিময় সফরে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশে ফিরে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম

উন্নয়ন ও জ্বালানি অধিকারের প্রাথমিক কথন
বলা হয়ে থাকে শক্তি বা জ্বালানি হলো সভ্যতার সোপান। জ্বালানি আছে বলেই আমরা উন্নত। জ্বালানির কারণেই আজ পরিবেশ এবং পৃথিবী যেমন উন্নত তেমনি ক্ষতবিক্ষতও। সবকিছুৃতেই জ্বালানি। এটা কোন অবিশ্বাস্য বিষয় নয়; অনেক বাস্তব। জ্বালানির কারণেই দেশে দেশে বৈষম্যের চিত্রগুলোও ভেসে উঠছে। শুধু দেশে দেশে নয়। এটি একটি দেশের ভেতরে অঞ্চলে অঞ্চলে, এমনকি সমাজে সমাজেও প্রতীয়মান। অধিকার ও জ্বালানি তাই অনেকটা সম্পর্কিত একটি বিষয়। অধিকার আদায়ে, সুবিধা আদায়ে সবাই তৎপর। হচ্ছে গবেষণাসহ নানা পলিসি তৈরির কাজ। কেউ করছে তার ব্যবসার খাতিরে, কেউ আবার পরিবেশের, কেউ করছে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে। 20171109_113137কোনটিই অযৌক্তিক নয়। একটি আরেকটির সাথে সম্পর্কিত। উন্নয়ন যেমন মানুষের মতামত এবং অধিকার কেড়ে নেয় আবার কিছু উন্নয়ন মানুষের মতামত এবং অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করে। বিশ্বব্যাপী তাই উন্নয়নের নানামাত্রা লক্ষ্য করা যায়। প্রান্তিক মানুষের উন্নয়ন অধিকার দিনে দিনে যেমন সংকুচিত হয়ে এক ধরনের উঁচু শ্রেণীর হাতে মুষ্টিবদ্ধ হচ্ছে। তেমনি উন্নয়নকামী মানুষগুলোর অধিকার নিয়ে নানা ধরনের খেলাও চলছে। সারাবিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অন্যরকম সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের মধ্যে ভারতও এ দিক থেকে অনেক এগিয়ে। বাংলাদেশেও আর পিছে পড়ে নেই। বিগত দিনে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশেও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। তবে প্রান্তিক মানুষের নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেবা ও পরিষেবাগুলো অনেকটা সংকোচিত হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি নতুন কোন বিষয় নয়, হাজার বছর থেকে বাতাসের সাহায্যে যেমন পালতোলা নৌকা নদীতে চলে, বাড়ির উঠোনে কাপড় শুকাতে সূর্যশক্তির প্রভাব আবার প্রাকৃতিক জলাধারে মানুষের নানা ব্যবহার, সবুজ বৃক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত জ্বালানি সংগ্রহ সবই নবায়নযোগ্য জা¡লানির উৎসই বটে। কিন্তু আমরা দিনে দিনে সেই নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো ধ্বংস করেই চলেছি। শুধূ সুর্যনির্ভর সোলার প্যানেল নিয়ে হইচই করছি বেশি। এটিকে যেমন গুরুত্ব দিতে হবে তেমনি প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো সুরক্ষায়ও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কারণ আমার গাছ না থাকলে আমি অক্সিজেন পাবো না, জ্বালানি পাবো না। আমার প্রাকৃতিক জলাধার না থাকলে আমি মাছ পাবো না, আমি পানি পাবো না। এরকম আরো কতো কি! সবকিছুকেই গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলেই সবকিছু ঠিক থাকবে। কারণ পুরো সভ্যতাই যেমন উন্নয়ন ঘটছে এই জ্বালানির কারণে তেমনি জ্বালানির কারণেই ধ্বংস হবে।

কমিউনিটি পর্যায়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি-পশ্চিমবঙ্গ, সুকুমারীর অভিজ্ঞতা
কয়েকটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে বাংলাদেশ থেকে ইমরান আলী, রামকৃষ্ণ, হ্যাপী রায়, নজরুল ইসলাম,এরশাদ আলী এবং আমি গত ৭ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর ভারতের দক্ষিণ ২৪ পারগণার ‘পল্লী উন্নয়ন সমিতি বারুইপুর’ এর কমিউনিটিভিত্তিক সোলার এনার্জি প্রকল্পের কর্মএলাকা গোসাবো থানার সুকুমারী গ্রামের মানুষের সাথে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বিনিময় করি। বাংলাদেশের স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারতে পেট্রাপোল হয়ে 20171108_092325গোসাবোর সেই সুকুমারী গ্রাম। সুন্দর বনের কোলঘেঁষে, লোনা পানির জলের উপরে যেন দ্বীপ বেষ্টিত এখানকার গ্রামগুলো। নদী ও জলের উপরই এই গ্রামের মানুষের বেশির ভাগ পেশা। কিছু দিন আগে নামকাওয়াস্তে বিদ্যুৎ লাইন আসলেও সৃষ্টির শুরু থেকে এখানে কোন বিদ্যুৎ ছিলো না। বিদ্যুতের লাইন আসলেও সবসময় বিদ্যুৎ থাকে না। তবে এখানে বলে নেয়া ভালো যে, এই সুকুমারী গ্রামের মানুষগুলো ইতিমধ্যে সোলার এনার্জি বা সোলারের আলোয় অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। সবকিছুর মধ্যেই এই সোলার শক্তি তাদেরকে নানা সহায়ক শক্তি যোগান দিয়ে থাকে। তাই সোলার এনার্জি তাঁদের অনেক বেশি দরকার। কারন্টে/ বা বিদ্যুৎ এই আছে এই নেই অবস্থা। এখানে বলা ভালো যে, ভারতে অন্যান্য রাজ্যে বিদ্যুতের অবস্তা অনেক ভালো। সেখানে কখনো বিদ্যুৎ যায়না। এই অভিজ্ঞতা বিনিময়কালে আমরা সবাই ২৪ ঘণ্টা কাটিয়েছি কলকাতা শহরের ভিতরে। সেখানে দেখেছি একবারও কারেন্ট যায়নি বা লোডশেডিং হয়নি। সেসময় মনে হয়েছে সব দেশেই মনে হয় এরকই। কারণ ধনীদের যেখানে বসবাস সেখানে সহজেই কারেন্ট যায়না। কারণ পশ্চিমবঙ্গের গোসাবো এলাকার সুকুমারী গ্রামে বেশির ভাগ খেটে খাওয়া মানুষগুলোই বসবাস করে। ধনী গরিবের বৈষম্য সবদেশে সবকালে মনে হয় একই রকম।

প্রথম দিনের গোসাবোর অভিজ্ঞতা জানার পর, আমাদের জানার ইচ্ছা আরো বেড়ে যায়। আমরা দলের সকলে মিলে বাস্তব অভিজ্ঞতার ফলে হোটেলে রাতে বসে এই অভিজ্ঞতার আরো কিছু লক্ষ্য উদ্দেশ্য ঠিক করে ফেলি । যেগুলো এখানে উল্লেখ না করলেই নয়। উদ্দেশ্যগুলো ছিলো: ১. কমিউনিটি ভিত্তিক সোলার এনার্জির ইমপেক্ট জানা ২. কমিউনিটি পর্যায়ে নবায়নযোগ্য জ্বলানি এবং নারীর সক্ষমতার দিকগুলো জানা ৩. কমিউনিটি পর্যায়ে সোলার এনার্জি কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রসেস সম্পর্কে জানা, ৪. কমিউনিটি পর্যায়ে সোলার এনার্জির কারিগড়ি দিকের সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে জানা ৫. নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গ্রামের প্রান্তিক মানুষের প্রবেশাধিকারের দিকগুলো জানা এবং ৬. শহর ও গ্রামের জ্বালানি পরিস্থিতি/ অবস্থা জানতে পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় শহর কলকতায় ২৪ ঘণ্টার প্রত্যক্ষ দর্শন।

গোসাবো গ্রোথসেন্টার ও প্রান্তিক মানুষের জ্বালানি সেবা
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের ২৪ দক্ষিণ পরগানা জেলার গোসাবো পঞ্চায়েত এলাকায় পল্লী উন্নয়ন সমিতি বারইপুর’এর গ্রোথসেন্টার সৃষ্টির মাধ্যমে সুন্দরবনের নিকটবর্তী গ্রামগুলোতে মে ২০১৬ সাল থেকে কমিউনিটিভিত্তিক সোলার এনার্জি কর্মসূচির কাজ করছে। দাতা সংস্থা মিজারিওর জার্মানির আর্থিক সহযোগিতায় উক্ত প্রকল্পটি এবিসিডি (অইঈউ – অংংড়পরধঃরড়হ ড়ভ ইবহমধষ ঈড়ষষধনড়ৎধঃড়ৎং ভড়ৎ উবাবষড়ঢ়সবহঃ) সহযোগী সংগঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে।

জননেতৃত্বে সোলার পাওয়ার গ্রীড
বিদ্যুৎহীন সুকুমারী গ্রামের ৩২টি পরিবারে জন্যে প্রায় তিনবছর আগে সংস্থাটি নিজ খরচে ৩ কে:ভি ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সোলার প্যানেল তৈরি করে দেয়। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। এখানে সোলার প্যানেলের পাশাপাশি একটি বায়ু টারবাইনও যুক্ত করা হয়েছে। কখনো যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন বা রোদ না উঠে, ঝড়বৃষ্টি বেশি দিন স্থায়ী হয় তাহলে বায়ু টারবাইনের ম্যাধমে ব্যাটারি চার্জ প্রাপ্ত হয়। দু’টি প্রযুক্তি সংযুক্ত হওয়ায় এখানে সার্বক্ষণিক এবং সব 20171109_103906ধরনের আবহাওয়ায় গ্রামের মানুষগুলো আলো পায়। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই আলো পেয়ে থাকে। গ্রামের এই ৩২টি পরিবার নিয়ে তারা নিজেরাই “সুকুমারী সোলার ভিলেজ কমিটি” গঠন করেছেন। এটিকে সোলার পাওয়ার গ্রীড ব্যবস্থাপনা কমিটিও বলা হয়ে থাকে। প্রথম পর্যায়ে দাতাসংস্থা অর্থ খরচ করলেও পরবর্তীতে এই সোলার সিস্টেমের সকল দেখভাল বা দায়দায়িত্ব উক্ত কমটি করে থাকে। প্রতিটি পরিবার মাসভিত্তিক ৬০ টাকা জমা করে। এই টাকা জমার জন্যে তারা নিজেদের নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলেছেন। সোলারের কোন সমস্যা বা ক্ষতি হলে তার সেই টাকা ব্যবহার করেন। এর ফলে সোলার পাওয়ার গ্রিডটি অনেক দিন থাকবে এবং এর যতœ এবং সার্বিক দিকগুলো জনগণই দেখভাল করেন।

কমিউনিটি পর্যায়ে দক্ষ লোক তৈরি
সোলার হোম সিস্টেম এবং সোলার প্যানেল ঠিক করার জন্যে যাতে তাদের অন্য কোথাও বা দুরে যেতে না হয় এর জন্যে তাদের মধ্যে থেকে একাধিক ব্যক্তি এ বিষয় কারিগরি ট্রেনিং দিয়েছেন। এর ফলে সোলার হোম সিস্টেম বা সোলার প্যানেলের কোন ধরনের সমস্যা হলে তারা নিজেরাই সমস্যার সমাধান করে নিচ্ছেন। জীবিকা এবং নতুন পেশা তৈরিতেও এই উদ্যোগটি বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন।

সোলার ল্যাম্প তৈরি করে নারীরা স্বালম্বী হয়েছেন
প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সংস্থাটি একজন নারীকে সোলার ল্যাম্প তৈরির প্রশিক্ষণ দেয় দুই বছর আগে। সুকুমারী সাতজেলিয়া গ্রামের ঐ নারীর নাম সোনাই মন্ডল। তিনি নিজেই এখন সোলার ল্যাম্প তৈরি করে বিক্রি করেন। একই সাথে এ পর্যন্ত ৫ জন নারীকে এই ট্রেনিং অভিজ্ঞতা দিয়েছেন। তারাও সেই ল্যাম্প তৈরি করে বিক্রি করছেন। উপকরণ/কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে সংস্থাটি সহযোগিতা করে থাকে। এর ফলে ওই নারীদের সামাজিক এবং পারিবারিক মর্যাদা বেড়েছে। কথা হয় সোনাই মন্ডলের সাথে। তিনি বলেন, “আমি এখন নিজেই একটি দোকান দিয়েছি, অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি আমি সোলার ল্যাম্পও বিক্রি করে থাকি।”

প্রান্তিক মানুষের অধিকার ও বিভিন্ন উদ্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে
গ্রামটিতে সোলার হোম সিস্টেম বা সোলার গ্রীড সিস্টেম এবং সোলার ল্যাম্প এর ব্যবহার করায় প্রান্তিক মানুষেরা তাদের কাজগুলো রাতেও করতে পাচ্ছেন। একই সাথে ছাত্ররা রাতে লেখাপড়া করতে পারে। জেলেরা ল্যাম্প ব্যবহার করে মাছ শিকার করে আয় বেড়েছে। অনেক সময় সুন্দরবনে মধু আহরণে তারা এই ল্যাম্প ব্যবহার করার ফলে নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। সোলার বিষয়ে ধারণা এবং নিজেরাই কারগরি দক্ষতা বৃদ্ধি পাওয়া এই বিষয়ে তাদের অধিকার এবং সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ তারা নিজেরাই অনেকে সোলার বোর্ড/প্যানেল/ তার/ ক্যাবল এবং অন্যান্য উপকরণের গুণাগুন বুঝতে পারেন। তাই অনেকসময় মানহীন উপকরণ দিয়ে তাদেরকে কেউ ঠকাতে পারেনা। সুকুমারী গ্রামের প্রবীণ নির্বাণ মন্ডল বলেন, “আমি এই বুড়ো বয়সেও আয় করছি। কারণ আমার ঘরে সোলার প্যানেল আছে, আলো জ্বলে, রাতেও আমি জাল বুনি। মাস শেষে জাল বুনেই আমি হাজার দুয়েক টাকা আয় করতে পারি। আমার মন চাইলেই জাল বুনতে ধরি।” গ্রামটিতে নানা ক্ষেত্রেই সোলরা বাতির প্রভাব লক্ষ্য করার মতো। বিশেষ করে নারীদের রান্না বান্নার কাজে এই সোলার বাতি অনেক উপকার করে থাকে। একই সাথে নিরাপত্তাহীনতার দিকের উন্নয়ন হয়েছে।

সুকুমারীর কৃষি যেন অন্যের হাতে
গ্রামটি পর্যবেক্ষণ ও কৃষক-কৃষাণীদের সাথে প্রত্যক্ষ কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগেও এলাকায় সব ধরনের বীজ পাওয়া যেতো। গ্রামের বীজের বাজার বসতো। সবাই বীজ উৎপাদন করতো। কিন্তু বিগত ১৫ বছর থেকে এমন অবস্থা হয়েছে কোন কৃষকই আর বীজ রাখে না। সবাই বাজার নির্ভরশীল/ কোম্পানি নির্ভরশীল বীজের মাধ্যমেই চাষাবাদ করেন। এই প্রসঙ্গে প্রবীণ কৃষক সরোজ মন্ডল বলেন, “আগের জাত আর নেই বাবু। আমারা এখন বাজার থেকে সব বীজ কিনে নিই। এখন যে দু একটা আছে পুরাতন জাত তা পাওয়া অনেক কঠিন। আমি নিজের খাবারের জন্যে “দুধের সর” আমন ধানের চাষ করি।” জানা যায়, সবজি বীজ একেবারেই নেই। কৃষিতে রাসায়নিক এবং কীটনাশক ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হয়। গ্রামটিতে এমন কোন কৃষকের নাম শোনা যায়নি যে তিনি কোন অর্গানিক প্রাকটিস বা যতসামান্য এটা ব্যবহার করেন। সেদিক থেকে বলা যায় আমাদের বাংলাদেশে এই বীজ এবং বিষের দিকে কৃষকরা অনেক সচেতন।

happy wheels 2

Comments