ফুটেছে ফুল “মোরগঝুটি”

আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ ॥

রেশমি পালকের মতো ছোট ছোট ফুলের ঠাসা মঞ্জরি। নানা রঙের ফুল- লাল, কমলা, হলুদ, সোনালি, সাদা। মোরগের মাথার ঝুঁটির আকৃতির কারণেই এর নাম হয়েছে মোরগফুল। দূর থেকে হঠাৎ দেখলে মনে হবে সত্যি কোন মোরগ বসে আছে। ফুলের বিন্যাসটাই এমন। মোরগফুল সচরাচর গ্রাম-গঞ্জের আঙিনায় দেখা মেলে। মানিকগঞ্জের বসতবাড়ির উঠোনের পাশে, রাস্তার ধারে অবলীলাক্রমেই ফুটে থাকে। তবে ইদানিং বাণিজ্যিকভিত্তিক এ ফুলের চাষ করা হয়। বিভিন্ন নার্সারিতে এ ফুল গাছের চাহিদাও বেশ ভালো।

জানা যায়, এশিয়ার নিরক্ষয় অঞ্চল এবং আফ্রিকা আদি নিবাস হলেও বাংলাদেশে মোরগ ফুল একটি জনপ্রিয় ফুল। অঞ্চল ভেদে কোথাও কোথাও এ ফুলকে মোরগ ঝুঁটি, লালমুর্গা নামেও ডাকা হয়। Cockscomb flower ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম- Celosia argentea, পরিবার- Amaranthaceae ক্রান্তীয় এশিয়ার প্রজাতি। গাছ সাধারণত ৩০-৯০ সেঃমিঃ লম্বা হয়। বাগানে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো হয়ে থাকে।

01

নানা প্রজাতির মোরগফুল রয়েছে। প্রজাতি ভেদে গাছের পাতা, শাখা-প্রশাখা, কান্ড ও ফুলের রঙ ভিন্ন হয়। লাল, কমলা, হলুদ, সাদা, সোনালি ও মিশ্র রঙের মোরগফুল দেখতে পাওয়া যায়। ফুল গন্ধহীন, উজ্বল রঙের মোলায়েম পালকের মতো। গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করে রেখে দেয়ার পর ফুল শুকিয়ে গেলেও এর উজ্বলতা নষ্ট হয় না। ফুল শেষে পরিপক্ক ফুলের মাঝে বীজ হয়, বীজ ডাটা বীজের মতো। পরবর্তী মৌসুমে বংশ বিস্তারের জন্য বীজ সংরক্ষণ করে বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা যায়।

ঘিওরের বানিয়াজুরী এলকার নার্সারি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ জানান, মোরগফুল মূলত হেমন্ত মৌসুমের ফুল। মে মাসে বীজবপন করার পর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে গাছে ফুল ধরে এবং ফুল ফুটন্ত গাছ মার্চ মাস সময় পর্যন্ত টিকে থাকে, তারপর ফুলগাছ আপনা আপনি মরে যায়। রৌদ্র উজ্জ্বল পরিবেশ, নিষ্কাসিত ও প্রায় সব ধরনের মাটিতে এ ফুল গাছ জন্মে। বাসা-বাড়ি, অফিস, আদালত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, পার্ক ও অন্যান্য স্থানে এ ফুল গাছ চোখ পড়ে।

মোরগ ফুলের ভেষজ গুনাগুণ রয়েছে। বিশিষ্ট আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক উত্তম পালিত বলেন, “অতিরিক্ত প্রস্রাব উপশমে এবং আমাশয় রোগের চিকিৎসায় মোরগ ফুল ব্যবহার হয়ে থাকে।”

happy wheels 2

Comments