নিরাপদ খাদ্য সবার অধিকার
সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে শাহিনুর রহমান
প্রকৃত কৃষকদের কৃষি কাজে অনাগ্রহ, বর্গা চাষির সংখ্যা বেশি হওয়া ,অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা, জৈব ফসল উৎপাদনের প্রয়োজনীয় উপকরণ সংকট, জৈব পণ্যের প্রকৃত বাজারমূল্য না পাওয়া ও বাজারজাতকরণে স্থানীয় বাজার ব্যবস্থাপনার উদ্যোগের অভাব এবং সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের অন্তরায় হিসেবে বক্তারা উল্লেখ করেন।
সম্প্রতি ‘নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন বাজারজাতকরণ সংকট ও প্রস্তাবনা’ শীর্ষক উৎপাদক ভোক্তা, বাজার কমিটির সাথে সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। বলধারা কৃষি উন্নয়ন সংগঠন ও বারসিক’র যৌথ উদ্যোগে নিরাপদ খ্যাদ্য উৎপাদন বাজারজাতকরণ সংকট ও প্রস্তাবনা’ ভোক্তা, বাজার কমিটির সাথে সংলাপে উৎপাদক সংলাপটির আযোজন করে। সংলাপে বাংগালা, বড় কালিয়াকৈর, নবগ্রাম, কাস্তা, ৪টি গ্রামের কৃষক অংশগ্রহণ করেন।
বলধারা ইউনিয়ন সংগঠনের সভাপতি মো. আব্দুল লতিফের সভাপত্বিতে বারসিক কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের সঞ্চলানায় বারসিক কর্মকর্তা শিমুল বিশ্বাস নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে একটি ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন। সংলাপে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি প্রবীণ কৃষক মো. করম আলী মাস্টার ।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ ভোক্তা, বাজার কমিটির সদস্য বৃন্দ।
সংলাপে বক্তারা বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য জরুরি তার চেয়ে বেশি জরুরি হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য। কিন্তু ফসল উৎপাদনের সময় থেকে সংরক্ষণ ও বাজারজাত করা পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই নিরাপদ খাদ্যের অভাব। অধিক জনসংখ্যার কারণে খাদ্য ঘাটতি পূরুণ করার জন্য বর্গচাষীদের লীজকৃত জমি থেকে অল্প সময়ে অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে অনিরাপদ খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে।’
নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন সম্পর্কে বলতে গিয়ে করম আলী মাষ্টার বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য সবার অধিকার। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের স্বাস্থ্যসম্মত কৃষি চর্চায় উৎসাহিত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। সাথে সাথে স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচার এবং জৈব পণ্য বিক্রির জন্য স্থানীয় বাজারগুলোতে আলাদা স্থান নির্ধারণ করে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে প্রচারণা বৃদ্ধি করেতে হবে।’ কাস্তা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য পেতে হলে আমাদের উৎপাদনের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক পরিহার করে ফসল উৎপাদন করতে হবে। সেইসাথে ফসল সংরক্ষণ ও বাজার ব্যবস্থাপনার দিকে সকলের নজর দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শুধু কৃষকের পাশাপশি বাজার কমিটি এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে যেন ভেজাল পণ্য ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কোন পণ্য বাজারের প্রবেশ না করতে পারে।’