তানোরে কুচিয়া চাষে লাভবান আদিবাসীরা
তানোর, রাজশাহী থেকে মিজানুর রহমান
রাজশাহীর তানোরে পিছিয়ে থাকা আদিবাসী জনগোষ্ঠির ভাগ্যের উন্নয়নে উপজেলায় মৎস্য অধিদফতরের সহলার তাযোগিতায় ও নিজেদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে আদিবাসী সম্প্রদায়ে অর্থনৈতিক উন্নায়ন সহায়ক হচ্ছে।উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ ও গবেষণা প্রকল্পের আওতায় জেনোর উপজেলার বাবুডাইং আদিবাসীপাড়া, বনকেশর আদিবাসীপাড়া, জোৎগোকুল আদিবাসীপাড়া, গুড়ইল আদিবাসিপাড়া এবং শালবাড়ী আদিবাসীপাড়ায় মোট ৫টি প্রদর্শনীতে কুচিয়া মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩টি প্রদর্শনীর প্রথম পর্যায়ের কুচিয়া মাছ বাজারজাত করে এর সাফল্য পাচ্ছে আদিবাসীরা।
উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের বাবুডাইং কুচিয়া চাষ প্রকল্পের সভাপতি সুপল হেমব্রম জানান, প্রথম পর্যায়ে সরকার যাবতীয় প্রয়োজনীয় উপকরণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁরা ১০টি পরিবারের দশজন কুচিয়া চাষ ও দেখাশোনা করে ৭ থেকে ৯ মাস পর বিক্রি করে সম্পূর্ণ টাকা সবাই ভাগ করে নিয়েছেন। এখন স্ব-স্ব উদ্যেগে ওই ছোটপুকুরে আবার কুচিয়ার পোনা সংগ্রহ করে চাষ করবেন।
অন্যদিকে পাঁচন্দর ইউয়িনের বনকেশর প্রকল্পের সভাপতি নির্মল চন্দ্র বলেন, “আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন কুচিয়া চাষ প্রকল্প শুধু আধিবাসীদের দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।” তিনি আরও বলেন, সম্পূর্ণ টাকা সরকার দিয়েছে, আমরা পরিচর্যা করে যে টাকা ভাগ পেয়েছি তাতে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।”
কলমা ইউনিয়নের বনগাঁ গ্রামের কুচিয়া খামার মালিক ইমরান আলী বলেন, “আমার পাশের গ্রামে আদিবাসীপাড়ায় কুচিয়া চাষ দেখে আমি নিজ উদ্যোগে কুচিয়া চাষে উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করে কুচিয়া খামার গড়ে তুলি।” তিনি জানান, ৫বিঘা পুকুর লীজসহ কার্প জাতীয় মাছ চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে যে লাভ হবে, সেই তুলনায় মাত্র ৩০ ফিট ১২ ফিট একটি কৃত্রিম পুকুরে কুচিয়া চাষ করলে অনেক বেশি মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। এ মাছ অনেকে না খাওয়ার জন্য চুরি ঝুঁকি কম এবং পুকুর থেকে সহজে কেউ ইচ্ছে করলেও ধরতে পারে না। আর এ মাছের বাজারে প্রচন্ড চাহিদা হওয়ার বিক্রি ভালো হয়।
এনিয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরাফাত সিদ্দিকী জানান, বর্তমান সরকার মৎস্য প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় আদিবাসীদের ভাগ্য উন্নয়নে দেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ এবং গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে কুচিয়া চাষ প্রদর্শনী ও প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তিনি আরো জানান, তানোরে ৪টি ইউনিয়নে ৫টি প্রদর্শনী বাণিজ্যিকহারে সরকারের ও মৎস্য অধিদফতরের পৃষ্ঠপোষকতায় কুচিয়া প্রজনন শুরু হয়েছে। আদিবাসীদের লাভজনক ব্যবসা দেখে এলাকার বেকার যুবকরা কুচিয়া চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে বলেও জানান তিনি।