দুর্যোগ মোকাবেলায় শিক্ষার্থী-তরুণদের উদ্যোগে খেজুর বীজ বপন
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে সত্যরঞ্জন সাহা, মুক্তার হোসেন
হরিরামপুরে পদ্মা নদীর ভাঙন, বন্যা, রাস্তা ঘাট ভাঙন ও বজ্রপাত প্রতিবছরের ঘটনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষি ফসল ও জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। নদীর ভাঙন রোধে সরকার নদী শাসন (নদীর কোলে বাঁধ দিয়ে) ও জনগণ গাছপালা রোপণসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। তাছাড়াও শিক্ষার্থী ও তরুণ, সামাজিক ক্লাবের উদ্যোগে রাস্তার পাশে তাল খেজুর বীজ বপন করে রাস্তা-ঘাট ভাঙন রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। গতবছর দূর্যোগ মোকাবেলায় হরিরামপুর এলাকার শিক্ষার্থী-তরুণ, কৃষক-কৃষাণী, সামাজিক ক্লাবের উদ্যোগে ১৫ কিলোমিটার রাস্তায় তাল-খেজুর বীজ বপন করা হয়। এসব রাস্তায় পাশে তাকালেই দেখা যায় তাল খেজুরের গাছ বড় হয়ে উঠছে। এলাকার লোকজন মনে করেন, বপনকৃত খেজুর গাছগুলো বড় হলে খেজুর গাছের সংকট কমে আসবে। গাছি সম্প্রদায় খেজুর গাছ কাটার মাধ্যমে গুড় সংগ্রহ করে জীবন মান উন্নয়ন ও গুড় উৎপাদন করে খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক হবে।
এরই ধারাবাহিকতায় হরিরামপুরে বছরের শুরুতে বাহিরচরের ইউনাইটেড ক্লাবের উদ্যোগে বাহিরচরের ২ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে খেজুর বীজ বপন করা হয়। ক্লাবের সদস্যগণ বাড়ি থেকে সাবল, খনতা সংগ্রহ করে রাস্তার পাশে খেজুর বীজ বপন করেন। খেজুর বীজ বপনে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন ইউনাইটেড ক্লাবের সহকারী ক্যাশিয়ার মাহবুব রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাফর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক খোকন বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইউসুফ সরদার, কার্যকরি কমিটির সদস্য আলী হোসেন। এলাকার শিক্ষার্থী-যুবক, সমাজ সেবক শহীদ বিশ^াস এবং রেজাউল করিম খেজুর গাছ রোপণে অংশগ্রহণ করেন।
খেজুর বীজ বপনে উৎসাহ দিয়ে সাথে থেকে সহযোগিতা করেন বারসিক’র বিমল রায়, মুকতার হোসেন ও সত্যরঞ্জন সাহা। খেজুর গাছ রোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, “প্রাকৃতিক দূর্যোগ, নদী ভাঙন, রাস্তা ঘাট ভাঙন, ব্রজপাত মোকাবেলায় হরিরামপুর উপজেলায় বিভিন্ন রাস্তা ঘাট, চর এলাকায় ও পদ্মা নদীর বাঁধে খেজুর বীজ বপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেজুর বীজ বপনের মাধ্যমে পাখি থাকার আবাস স্থল ও খাবারের সহায়ক হবে। এসব গাছ বড় হলে বন্যায় রাস্তা ঘাট ভাঙন, বজ্রপাত মোকাবেলায় সহায়কের ভূমিকা পালন করবে। রাস্তার দুই পাশে খেজুর বীজ বপনের মাধ্যমে মাটির ক্ষয় রোধে সহায়ক হবে।”
হরিরামপুরের চর এলাকায় গাছপালা খুবই কম। খেজুর গাছ নেই বললেই চলে। ফলে বজ্রপাতে প্রতিবছর মানুষসহ ও প্রাণি সম্পদের ক্ষতি হয়। চরে খেজুর বীজ বপনের মাধ্যমে প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা হবে। রাস্তার দুই পাশে খেজুর গাছ হলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। এলাকার লোকজন খেজুর গাছ রোপণের জন্য স্বেচ্ছা শ্রম দেন। তাদের একটাই আশা, খেজুর গাছগুলো বড় হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা বন্যা, নদী ভাঙন রোধে ভূমিকা রাখবে।