আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে

মানিকগঞ্জ থেকে ঋতু রবি দাস
‘সময়টা ২০০৮ সাল তখন আমি ক্লাশ নাইনে উঠেছি। সেই সময়টায় প্রথম পরিচিত হই বারসিক নামের একটি গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে। আমাদের এলাকার এক মাসি নীলিমা দাস (৪৩) তিনি এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তার মাধ্যমেই আমি এবং আমার এলাকার সব শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানের সাথে পরিচিত হই। বারসিক’র বেশির ভাগই কাজগুলো তখন স্যাক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হত, আর আমরা সবাই স্যাক অফিসই বলতাম। ২০০৮ সাল থেকেই বারসিক রবি দাস পাড়ার শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার প্রসার নিয়ে কাজ শুরু করে।’


বারসিক‘র সাথে জড়িত হওয়ার পর থেকেই এক এক করে বারসিক কর্মকর্তাবৃন্দদের সাথে যোগাযোগ হওয়া শুরু হয়। সেই সময়টা রবিদাস পাড়ার সকলেরই কমবেশি আর্থিক সংকট ছিল, আর শিক্ষার মান ছিল খুবই নগণ্য। তাই বারসিক থেকে আমাদের পাড়ার সকল শিক্ষার্থীদের বারসিক প্রাইভেট পড়াতে শুরু করে। বারসিক আমাদের শিক্ষার জন্য কয়েকটা শিক্ষক-শিক্ষিকা রেখে দিয়েছিলেন। মাঝে মাঝে বিমল রায় আমাদের পড়াতেন, তাই তাকে আমি এখনও স্যার বলি। কমল চন্দ্র দত্ত স্যার এর কথা কি বলব, অনেক জ্ঞানী একজন ব্যক্তি। বিশেষ করে গণিতে তার জুড়ি মেলা ভার। দীর্ঘ ২ বছর তার কাছে আমরা সবাই তার কাছে পড়েছি। রাশেদা আপার সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক, তার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু জেনেছি এবং শিখেছি।


তখনকার সময়টা আমাদের পাড়ার মানুষরা অসচেতন ছিল, অনেক কিছুই জানত না। লেখাপড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে তাদের ধারণা ছিলনা, কন্যা শিশুদের প্রতি তাদের তেমন কোন দায়িত্ব ছিলোনা। স্বাস্থ্য , পুষ্টি সম্পর্কে ধারণা ছিলোনা। বারসিক আমাদের এলাকায় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, কোন কিছুর পরিবর্তন একদিনে হয়না, অনেক বছর লেগে যায়।


বারসিক যখন যেখানে, যেকোন প্রোগ্রামে ডাকত আমি যেতাম, কারণ সেখান থেকে অনেক কিছু জানার এবং শেখার থাকত। তখন থেকেই আমার একটা স্বপ্ন ছিল আমি বারসিকে চাকরি করব। আমার স্বপ্নটা যে একদিন সত্যি হবে কোনদিনই ভাবিনি। কিছু কিছু প্রোগ্রামে নজরুল দাদাকেও পেয়েছিলাম। বারসিক‘র মত একটি প্রতিষ্ঠান পেয়ে সত্যি আমি অনেক গর্বিত, শুধু চাকরি করি সেই জন্য না, বারসিকের এই অবদান আমি কোনদিনও ভুলব না, ধন্যবাদ ‘বারসিক’।

happy wheels 2

Comments