সাঁথিয়ায় চলছে অতিথি পাখি শিকার: প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব
জালাল উদ্দিন সাঁথিয়া (পাবনা)
পাখি পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও পাবনার সাঁথিয়ায় গাজারিয়া বিলসহ বিভিন্ন বিলে রাতের আঁধারে নির্বিচারে শিকার হচ্ছে অতিথি পাখী।ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। উপজেলার করমজা ইউনিয়নের আফড়া গ্রামের পাশে গজারিয়া বিল। যেখানে রয়েছে অতিথি পাখির আানাগোনা। এখানে প্রতিবছর উত্তরের শীত প্রধান অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসে নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। যেগুলো ‘অতিথি পাখি’ নামে পরিচিত।
বিলে গিরিয়া হাঁস, ভূতি হাঁস ,বক, ডাহুক, ডুবুড়ি, পানকৌড়িসহ অন্যান্য জলচর পাখি এখন ভিড় জমাচ্ছে গজারিয়া বিল ছাড়াও বিভিন্ন জলাশয়ে। অতিথি পাখিদের সঙ্গে মিলেমিশে এক হয়ে গেছে স্থায়ীভাবে বাস করা অন্যান্য পাখিগুলো। মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তের রসনা বিলাসের শিকার হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব পাখি। তারা রাতের আঁধারে মাছ মারা টেটা দিয়ে এসব পাখি শিকার করছে। আর দিনের বেলায় এয়ারগানের পাশাপাশি যাঁতিকল, বিষটোপ, ঘুমের ওষুধ, দিয়ে কৌশলে পাখি শিকার করছে।
সরেজমিন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শামুকজানি গ্রামের এক শিকারির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমি সখের বসে বন্ধুদের সাথে নিয়ে রাতে পাখি মারতে গিয়ে ৫০-৬০টি পাখি মেরেছি। বিলের মধ্যে ধান ক্ষেতে থাকা এসব পাখি টর্চ ও মাছ মারা টেটা দিয়ে মেরেছি। শুধু আমি না অনেকেই এভাবে পাখি মারছে। উপজেলার কাটিয়াদহ, মুক্তোর বিল, সোনাই বিল, টেংড়াগাড়ি বিল, ছোট বিল, বড় বিল থেকেও একইভাবে পাখী শিকার করা হচ্ছে।’
একজন শিক্ষিত মানুষ শখের বসেই শিকার করুক আর একজন অশিক্ষিত মানুষ অসচেতনতা বশতঃ শিকার করুক না কেন পাখি শিকার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। রাজশাহী বিভাগের পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি পরিযায়ী পাখি শিকার করেন তাহলে তার সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।’
ছবি: সংগৃহীত