কেমন আছে আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীরা
মানিকগঞ্জ থেকে বিমল চন্দ্র রায়
করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তবে এটাও ঠিক যে, অনেক দেশ ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন যাবত লকডাউনের প্রায় দুইটি শিক্ষাবর্ষ চলছে কোন ধরনে ক্লাস ও পরীক্ষা ছাড়াই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই দীর্ঘ বন্ধের কারণে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে পড়াশুনা করছে, অনলাইন ক্লাশ করছে ঠিক কিন্তু এটি কেবলমাত্র শহরের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া বাড়িতে থেকে পড়াশুনা এবং স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদেও তত্ত¡াবধানে পড়াশোনা করা এক জিনিস নয়। প্রকৃতপক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের বন্ধের কারণে শহর ও গ্রামের প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীরই ক্ষতি হয়েছে!
আমরা বিভিন্ন আলোচনা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তা বুঝতে পারি যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে গ্রামের প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত। দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে অনেক গ্রামে বাল্য বিয়ের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী এখন পড়াশোনা বাদ দিয়ে মোবাইলে গেম খেলে! তবে ছাত্রীরা গেমস না খেললেও তাদেও তেমন পড়াশোনা হয় না বলে তারা জানায়। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখন প্রযুক্তিতে আসক্ত হচ্ছে, বিশেষ করে মোবাইল গেমস-এ। পরিবার পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে, নি¤œ, মধ্য পরিবারসমূহের সন্তানরা দিনের ও রাতের বেশির ভাগ সময়ে অনলাইনে ব্যস্ত থাকে। এই অনলাইনে ব্যস্ততা মানে এই নয় তারা নতুন নতুন কিছু প্রযুক্তির সাথে যুক্ত হয়ে জ্ঞান দক্ষতা বাড়াচ্ছে বরং কোন গেমস খেলায় আসক্ত হয়েছে। এই আসক্তি তাদেও জন্য ভালো কোন ফল বয়ে আনবে না। অনেক শিক্ষার্থী খাওয়া, নাওয়া বা ঘুম বাদ দিয়ে দিনব্যাপী মোবাইলে ব্যস্ত থাকছে। গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়, তরুণ শিক্ষার্থী একটি জায়গায় (নেটওয়ার্ক যেখানে ভালো) একত্র হয়ে খুব ব্যস্ত সময় কাটায়।
আমরা জানি, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিষয়ে একটি পাঠ্যবই সংযুক্ত আছে। তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষতা সুন্দর ভবিষ্যত রচনা করতে সহায়তা করে। তাই নতুন প্রজন্মকে তথ্য প্রযুক্তির সকল ধরনের বিষয়ে দক্ষ হতে হবে, জানতে হবে এবং অংশগ্রহণ করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার বাড়াতে হবে। দেখা যায়, গ্রামের অনেক তরুণ শিক্ষার্থী না বুঝে ভুল করে বা ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে এবং অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই অবস্থায় তরুণ প্রজন্মকে সঠিক নেতৃত্ব ও তথ্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতে তরুণদেরই এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও ভূমিকা নিতে হবে। তাই আসুন নিজেদের সন্তানের প্রতি যতœশীল হই এবং নিয়মিত মনিটরিং করে তাদেরকে সঠিক পথে রাখি।