সুন্দরবনের মধু উৎসব

সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে বাবলু জোয়ারদার ও গাজী আল ইমরান

বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন। পৃথিবীর বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এর আয়তন প্রায় ৬০১৭ বর্গ কিলোমিটার। চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে জালের মত ছোট অসংখ্য নদীনালা। সাগর উপকূল হওয়ায় প্রতিদিনই এ বন জোয়ার-ভাটার পানি উঠানামা করে। সুন্দরী গাছের নাম অনুসারে এ বনের নাম হয়েছে সুন্দরবন। বাংলাদেশে ৬২ শতাংশ এবং ভারতে ৩৮ শতাংশ পড়েছে। মধু ও মোম আর এক অমূল্য সম্পদ। মৌমাছিরা বনের ফুল থেকে মধু সঞ্চয় করে চাক তৈরি করে। এ চাক থেকে মৌয়ালরা মধু ও মোম সংগ্রহ করেন। এভাবে অনেক মানুষ সুন্দরবনের মধু, মোম সংগ্রহ করে ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। দিনে দিনে মধুর চাহিদা বাড়ছে।

2 (12)

‘সচেতন বনজীবী নিরাপদ সুন্দরবন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গত পহেলা এপ্রিল ৯ নং বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের নীলডুমুরে মধু আহরণ উদ্বোধনী-২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের আয়োজনে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুনের সভাপতিত্বে অতিথি বক্তব্য রাখেন নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম মহসিন উল মূলক, নৌ-পুলিশের ওসি ওনিমেশ হালদার, ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল, মাসুদুল আলম, সহকারী বন সংরক্ষক রফিক আহমেদ, সোনার বাংলার পরিচালক নাজমুস সাদাত পলাশ, বেডস এর শান্তানু বিশ্বাসসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে মৌয়াল ইকবাল হোসেন মন্টু বনের অভয়ারণ্য এলাকায় মধু আহরণ, একসাথে সকলেই পাস পারমিট পাওয়া এবং ১৪ দিনের বেশি সময় পাশ পারমিটের আবেদন জানান। এ সময় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন বিষয়টি উর্দ্ধোতন কর্তপক্ষের মাধ্যমে নিরসনের জন্য আশ্বস্ত করেন। অনুষ্ঠানে মৌয়ালীদের উদ্দেশ্যে বক্তারা মৌয়ালদের উদ্দেশ্য সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ করার আহবান জানান।

3 (8)
আলোচনা সভা শেষে সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ষ্টেশনে মৌচাক কেটে মধু আহরণ উৎসব-২০১৯ উদ্বোধন করা হয়। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্টেশন কর্মকর্তা কে এম কবির হোসেন, যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার আহসানুর রহমান রাজীব, প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা আবু সাইদ, গাজী সালাউদ্দীন বাপ্পী, এনজিও সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বারসিক’র লিয়াজোঁ অফিসার গাজী আল ইমরান, রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন মিঠু, বারসিক’র সহযোগি কর্মসূচী কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিলন, সাংবাদিক আনিসুজ্জামান আনিস, সাংবাদিক মিজানুর রহমান মিজান সহ অনেকে।

পহেলা এপ্রিল থেকে ১৫ জুন ২০১৯ পর্যন্ত মধু আহরণ উৎসব চলবে। চলতি বছর সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৩ হাজার মণ মধু ও এক হাজার মণ মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

happy wheels 2

Comments