সামাজিক সহিংসতা রোধে প্রয়োজন সরকারের সুশাসন ও নাগরিকের সচেতনতা
মানিকগঞ্জ থেকে মো. নজরুল ইসলাম
‘জেন্ডার বৈচিত্র্য সুরক্ষা করি নারীবান্ধব সমাজ গড়ি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল মানিকগঞ্জ সিংগাইর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র যৌথ আয়োজনে বিদ্যালয় সেমিনার কক্ষ্যে সাম্প্রতিক সময়ে ‘নারী-শিশু হত্যা ধর্ষণ ও গুজবের জন্য জন অসচেতনতাই প্রধান অন্তরায়’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় পক্ষ ও বিপক্ষ দলের যুক্তি খন্ডনের পর উভয়ের মাঝে পুরুস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আকরাম হোসাইনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজ উদ-দৌল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক বেনিমাধব সরকার, সিংগাইর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতাউর রহমান, বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক এ কে এম সাইফুর রহমান, বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয় কারি বিমল রায় প্রমুখ। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মর্ডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. সুজন মিয়া, এবং বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শায়লা শারমিন, আবৃত্তি প্রশিক্ষক শাকিল আহমেদ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দেশে নারী-শিশু নির্যাতন হত্যা ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, ইভটিজিং ও গুজব মহমারির আকার ধারন করেছে। বর্তমান সমাজে কেউ নিরাপদ নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ভেঙ্গে পড়ছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাচ্ছে এগুলো কাম্য নয়। অন্যদিকে জনগণ তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করছেন না, আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন যেটি খুবই দুঃখজন।’ তাঁরা আরও বলেন, ‘সংবিধানে আমাদের দেশ অসাম্প্রদায়িক সম্প্রতির একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল রাষ্ট্রের কথা বলা থাকলেও সেটি বাস্তবায়িত হচ্ছে না; আবার একটি কুচক্রী মহল সেটি করতে বাধার সৃষ্টি করছে। এগুলো মোকবেলা করতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিক্ষার মধ্যে বিশেষ করে বিতর্ক আবৃত্তি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চা আরো জোরদার করতে হবে এবং সরকারকে এই ধরনের কাজে উদ্যমী যুব সমাজকে উৎসাহিত করতে হবে, প্রণোদনা দিতে হবে।’
বক্তারা জানান, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সম্পর্ক আরো ভালো করতে হবে। শুধু ভালো ফলাফল দিলে হবে না; হতে হবে ভালো মানুষ। তবেই সমাজ আদর্শ হবে এবং ভীতির সমাজ থেকে সবাই বেরিয়ে আসতে পারবেন। প্রীতি ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগামী প্রজন্মকে আরো আলোকিত হতে হবে। তাঁরা আরও জানান, বারসিক’র মত সামাজিক সংগঠনগুলোর আয়োজন উপজেলার প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ুক এটাই প্রত্যাশা। এভাবে সরকার ও নাগরিকের যৌথ দায় ও দায়িত্বই সকল প্রকার সামাজিক সহিংসতা রোধ করতে ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য যে, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিপক্ষ দলের বিজয়ীরা হলেন দলনেতা খন্দকার খালেদ মাহমুদ,আল্পনা আকুল মেধা,আফরোজা সুলতানা শিখা, রাফিজা খান রেবা। বিজীতরা হলেন দলনেতা সোলাইমান ইসলাম, সুমাইয়া মোস্তফা, রোমান মিয়া, সাবিহা ইসলাম প্রমুখ।