লবণাক্ততায় বিকল্প পদ্ধতিতে সবজি চাষ
সাতক্ষীরা শ্যামনগর থেকে মনিকা পাইক
আগ্রহ ও ইচ্ছাশক্তি থাকলে অনেককিছু সম্ভব হতে পারে। সেটাই প্রমাণ করলেন শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের আলীপাড়া গ্রামের কৃষাণী নিলুফা বেগম। বিয়ের পরে শ্বশুর বাড়িতে ঠাঁই হয়নি তার। স্বামীকে নিয়ে আলাদা হতে হয় তাকে।শ্বশুর বাড়ির কোন সম্পত্তি না পাওয়ায় স্বামী, সন্তান নিয়ে যাযাবর জীবন যাপন করতে হয়েছে। অবশেষে নিলুফা বেগম ও তার স্বামী যতটুকু অর্থ ছিল তা দিয়ে ভিটা কিনে সেখানে বাস করতে শুরু করেন।
আশপাশের এলাকা থেকে তাদের এলাকাটি লবণাক্ত। সবজি চাষের জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়। নিলুফা বেগম বলেন, ‘আমার ভিটায় যে লবণাক্ত মাটি ছিল তা কেটে আমরা অন্য জায়গা থেকে মিষ্টি মাটি টলিতে করে নিয়ে এসে ভিটা উঁচু করে ভরাট করি। তারপর সেখানে সবজি লাগাই।’ তিনি আরও আরও বলেন, ‘আমার অনেক ইচ্ছা ছিল সবজি চাষ করার, অনেক পরিশ্রম করে জায়গাটি সবজি চাষের উপযোগি করেছি।’
নিজের মেধা ও শ্রম দিয়ে নিলুফা সেই ভিটায় অল্প করে সবজি চাষ শুরু করেন। একই সাথে কিছু হাঁস মুরগিও চাষ করেন। অল্প অল্প করে তিনি সবজি চাষের জায়গা বাড়াতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘এই বছর আমি ১৫ কেজি আলু চাষ করে ৪ মণ আলু পেয়েছি। সবজি চাষ করে আমি নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট অংশ বিক্রি করে সংসারের কাজে ব্যয় করতে পেরেছি।’ তিনি আরো বলেন, এখন আমার কাছে ১০ রকমের বীজ আছে। পাড়া প্রতিবেশীদেরও বীজ দিয়ে থাকি। আমার প্রয়োজন হলে অন্যের কাছ থেকে নিই। বীজ বাজার থেকে কিনি না, নিজে বীজ সংরক্ষণ করি এবং তা বিতরণ করি।’
কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে হলে নিলুফা বেগমের মত নারীদের কাজকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো উচিত। যাব মধ্য দিয়ে সুরক্ষা পাবে প্রাণ ও বৈচিত্র্য।