হরিরামপুরে পরিবেশবান্ধব চুলার মেলা অনুষ্ঠিত
হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
‘রান্নার কাজ করতে হয় বেশির ভাগ নারীদের আর তার জন্য লাগে চুলা। আর সেই চুলা তৈরি করার কারিগর নারীরাই।’ সম্প্রতি লেছড়াগঞ্জ চর উন্নয়ন কৃষক সংগঠন আয়োজিত পরিবেশবান্ধব চুলার মেলায় অংশগ্রহণ করে এই কথাগুলো বলেছেন হরিরামপুর পদ্মার পাড়ে পাটগ্রামচরে বাড়ি হাজেরা বেগম। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের এলাকায় যে সকল জ¦ালানি পাওয়া যায় তা দিয়ে কিভাবে ধোঁয়ামুক্ত চুলা তৈরি করে রান্না করা যায় সে বিষয় বিবেচনা করে এলাকার নারীরা পরিবেশবান্ধব এই চুলাগুলো তৈরি করেন।’
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে পাটগ্রাম চরে “লেছড়াগঞ্জ চর উন্নয়ন কৃষক সংগঠন” আয়োজনে বারসিক’র সহযোগিতায় পরিবেশবান্ধব চুলা এবং মুরগির বাচ্চা ফোটানোর হাজল ব্যবহার বিষয়ক মেলা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মেলায় পাটগ্রামচর, খরিয়াচর, হালুয়াঘাটা গ্রাম এবং লেছড়াগঞ্জ চর উন্নয়ন কৃষক সংগঠনের সদস্যসহ ২৫ জন নারী ৩০টি বিভিন্ন ধরনের পরিবেশবান্ধব চুলা এবং হাজল নিয়ে স্টল প্রদর্শন করেন।
চরাঞ্চলে মানুষের নিজজ¦ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং স্থানীয় সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধবচুলাগুলো তৈরি করেন। তার মধ্যে রয়েছে মুরগির হাজল এবং চুলার মধ্যে রয়েছে তিন ঝিকা চুলা, দুইমুখা চুলা, আলোক চুলা, বন্ধু চুলা, শিকা চুলা। এই চুলা তৈরি করতে মাটি, বাঁশ, ধানের কুড়া, গোবর ব্যবহার করে থাকেন।
এই প্রসঙ্গে পাটগ্রামচরে বাড়ি আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমাদের চরে প্রতি বছর বন্যা হয়। বাড়িতে বাড়িতে পানি উঠে তখন রান্না করার মত জায়গা থাকে না। আমরা তখন মাচায় এই মাটির আলগা চুলাগুলো ব্যবহার করে রান্না করতে পারি। আমাদের জ¦ালানি খরচ কম।’
পরিবেশবান্ধব চুলার মেলায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, পরিবেশবান্ধব চুলা ধুয়া কম হয়, জ¦ালানি কম খরচ হয়। অন্য চুলাগুলো রান্না করতে আমাদের চোখেমুখে বেশি ধুয়া লাগে এবং পাতিলে বেশি কালি হয়। আজকের মেলার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের চুলা এবং মুরগির হাজল দেখে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন হলো।
আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন, কৃষক সোনাামিয়া, হাজেরা এবং বারসিক কর্মকর্তা মুকতার হোসেন ও সত্যরঞ্জন সাহা।