অচাষকৃত উদ্ভিদের গুনাগুণ জানতে পারে নতুন প্রজন্মরা
ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার ও শ্যাময়েল হাসদা
ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের যুব সংগঠন আলোর পথ এবং বারসিক’র উদ্যোগে সম্প্রতি মানিকগঞ্জের ঘিওরে অচাষকৃত খাদ্য ও উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পুষ্টি সচেতনতায় পাড়ামেলা ও আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলায় গ্রামের কৃষক-কৃষাণী, নতুন প্রজন্ম, ইউপি সদস্য, শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বারসিক কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/12/393932400_3731351590468836_3315363991894307461_n-3-1024x461.jpg)
মেলায় ২৫ জন নারী তাদের নিজ এলাকার রাস্তার ধার, জমির আইল, পুকুর ধারে, পতিত জায়গা থেকে ৩২ ধরনের অচাষকৃত উদ্ভিদ সংগ্রহ করে নিয়ে প্রদর্শন করেন। প্রদর্শনীতে এ সকল উদ্ভিদের সংগ্রহস্থান, গুণাবলী, ব্যবহার, কোন মৌসুমে বেশি পাওয়া যায়, কোনটি কি দিয়ে রান্না করা হয়, কোনটি মানুষ ও প্রাণীর ঔষুধ হিসাবে ব্যবহার হয় এসব বিষয় তুলে ধরেন প্রদর্শনকারীরা ।
মেলায় অংশগ্রহণকারী-সীমা সরকার, শিউলি সিং, আন্না সিং, কল্পনা, আকলিমা বেগম, রঞ্জু রানী সরকার, সবিতা সিং, রাহেলা ,অঞ্জনা রানী জানান, আমাদের এখানে শীতকালে বেশি আপনজালা শাক পাওয়া যায়। আমাদের ২৬ জন ছেলে-মেয়েদের এই মেলার মাধ্যমে আপনজালা শাকের গুনাগুণ সম্পর্কে জানাতে পারলাম। গ্রামে আমরা অনেক রোগের চিকিৎসা এমন গাছ গাছালি দিয়ে করে থাকি।’ তাঁরা আরও জানান, ‘এলাকায় এখন আগের মত শাক পাওয়া যায় না, আমাদের শিশুদের জন্য এগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে। আজ আমরা একত্র হয়ে মেলায় অংশনিতে পারায় সকলের মধ্যে আপনজালা শাকের গুরুত্ব বাড়বে। মেলায় আগত শিক্ষার্থী অঙ্কিতা, দিয়া, রেশমি, অয়ন অচাষকৃত শাকসবজির গুনাগুণ সম্পর্কে ভালো ধারণা লাভ করেছে বলে তারা জানায়।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2023/12/403631982_373595041776729_3839440985314846973_n-1024x461.jpg)
এই প্রসঙ্গে আলোর পথের সভাপতি মো: আকাশ মিয়া বলেন, ‘দুর্যোগের ফলে এলাকা থেকে নানান ধরনের উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে এগুলোর জন্মানো কমে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মর শিশুরা এই মেলার মাধ্যমে নিজেদের বাড়ির আশেপাশের বিভিন্ন উদ্ভিদের গুনাগুণ জানতে পারে।’ মিজানুর রহমান হৃদয় বলেন, ‘আমাদের এলাকায় অনেক ধরনের আপনজালা শাকসবজি আছে তা এই মেলার মাধ্যমে দেখতে পেলাম। সাথে সাথে এগুলোর গুণাবলী সম্পর্কে যেমন জানতে পারলাম, তেমনিভাবে আমাদের নতুন প্রজন্মরা জানতে পেরেছে। নতুন প্রন্মদের ভিতর অচাষকৃত উদ্ভিদের গুনাগুণ জানার মাধ্যমে সুস্থভাবে টিকে থাকবে আমাদের পৃথিবীর নতুন প্রজন্ম।’
সমাজকর্মী ভজন কুমার সরকার বলেন, ‘আমাদের অনেক পরিবারের খাদ্য চাহিদা ও পুষ্টির গুণাবলি মিটায় এসমস্ত কুড়ানো শাক দিয়ে। এগুলো আমাদের সকলের উদ্যোগে টিকিয়ে রাখতে হবে। বারসিক’র এমন উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানাই।’ বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় জানান, ‘নতুন প্রজন্মদের কাছে অচাষকৃত উদ্ভিদের গুনাগুণ সম্পর্কে জানাতে হবে। জমিতে কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে আপনজালা উদ্ভিদ টিকিয়ে রাখতে হবে। তাহলে আমাদের পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতির বৈচিত্র্য ভালো থাকবে।’