ইচ্ছা আর পরিশ্রমে হার না মানা এক দেলোয়ার
আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ
কঠোর পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। সৌভাগ্য নিয়েই পৃথিবীতে কোনো মানুষের জন্ম হয় না। কর্মের মাধ্যমে তার ভাগ্য গড়ে নিতে হয়। উদ্যেম, চেষ্টা ও শ্রমের সমষ্টিই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। জীবনে উন্নতি করতে হলে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।
ইচ্ছাশক্তি, একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রম করে সফলতার একটি সিঁিড় অতিক্রম করা মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার বড় কাটিগ্রামের এক কিশোর দেলোয়ার হোসেন। বড় পরিবার, ভ্যানচালক বাবা আদম আলীর একার রোজগারে সংসার চলে না। পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা দু’মুঠো খাবার যোগাতে কিছুটা দায়িত্ব পরে নিজের কাঁধে। তাই অন্যের জমিতে দিনমজুরি করতে হয় দোলোয়ার হোসেনকে। তবে লেখাপড়ায় তার খুব আগ্রহ। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও লেখাপড়া চালিয়ে গেছে সে। যার ফলে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে অদম্য এই মেধাবী দোলোয়ার হোসেন।
কাটিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করেছে দেলোয়ার। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে দেলোয়ার মেজ। অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজ করে সেই টাকা দিয়ে সে পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছে।
দেলোয়ার হোসেন জানায়, সে মানুষের মতো মানুষ হয়ে বাবা, মা ও ভাই-বোনদের কষ্ট লাঘব করবে। ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের সেবা করতে চায় দেলোয়ার।
দেলোয়ারের বাবা আদম আলী জানান, অভাবের সংসারে ছেলেকে ভালো খাওয়াতে, পরাতে পারেননি। অভাব ও অনটনের মধ্যে সে নিজে শ্রমিকের কাজ করে এত ভালো রেজাল্ট করেছে। তার সাফল্যে গর্বে বুকটা ভরে যায়।
তবে দেলোয়ারের উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাবা আদম আলী। তিনি বলেন, ‘পড়াতে পারব কি না, জানি না। পড়াতে গেলে তো অনেক টাকার প্রয়োজন।’