শুধু সৌন্দর্যই নয়, বেশ উপকারীও বটে
সাতক্ষীরা থেকে এস.এম নাহিদ হাসান।।
শীত পেরিয়ে প্রকৃতিতে বসন্ত এসেছে। নতুন রূপে সেজেছে প্রকৃতি। বসন্তের মাঠে ঘাটে যে ফুলগুলো সহজেই মানুষকে কাছে টানে তার অন্যতম একটি ভাট ফুল। কেউবা একে আবার বনজুঁই বা ঘেটু ফুলও বলে।
সাতক্ষীরা অঞ্চলে ভাট ফুল নামেই বেশি পরিচিত। চাষ নয়, কিংবা শখের বশেও কেউ লাগান না। ঝোপ-ঝাড়ে, বনে-জঙ্গলে, গ্রামের রাস্তার পাশে নিজের সৌন্দর্য ছড়িয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নেয়। অযত্ন আর অবহেলায় জন্মালেও এ ফুল নজর কাড়েই। সাতক্ষীরাসহ দেশের প্রায় অধিকংশ জেলায় এ ফুল দেখা যায়।
ভাট ফুল প্রসঙ্গে মুক্তকোষ উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে, ভাট গুল্ম জাতীয় বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Clerodendrum Viscosum। এটি গ্রাম বাংলার অতিপরিচিত উদ্ভিদ। বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার এ ফুলের আদিনিবাস। ভাট গাছের প্রধান কান্ড সোজাভাবে দন্ডায়মান , সাধারণত ২ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। দেখতে কিছুটা পান পাতার আকৃতির ও খসখসে। ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ির রঙ সাদা এবং এতে বেগুনি রং এর মিশেল আছে। সাধারণত মার্চ থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত এ ফুল গ্রামের মেঠো পথের দু’ধারে ফুটে থাকতে দেখা যায়। এ ফুল রাতে বেশ মিষ্টি সৌরভ ছড়ায়।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর, ধুলিহর ও ফিংড়ি ইউনিয়নের সড়কের দু’ধারে এ ফুল চোখে পড়ল। ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের সোনিয়া আক্তার বলেন, “আমাদের এলাকায় এ ফুল বেশি দেখা যায়। রাতে বেশ সৌরভ ছড়ায়। ছোট শিশুরা এ ফুল নিয়ে খেলা করে। আমরাও ছোটবেলায় এ ফুল নিয়ে খেলা করতাম।”
ফিংড়ি ইউনিয়নের জোড়দিয়া গ্রামের শেখ আশিকুজ্জামান বলেন, “বিষাক্ত কিছু কামড় দিলে ভাট ফুল রস করে ঐ স্থানে দিলে দ্রুত কাজ হয়। অনেকে আবার পেটের কৃমি দূর করার জন্য এ ফুলের রস খেয়ে থাকেন।” বৃক্ষপ্রেমী সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন বলেন, “গরু-ছাগলের গায়ে উকুন হলে ভাট গাছের পাতা বেটে দুই থেকে তিনদিন লাগালে উকুন মরে যায়।” এ বিষয়ে সাতক্ষীরা মসল্যা ভাণ্ডার হাকিম আব্দুল কাশেম বলেন, “ভাট ফুলের অনেক উপকারিতা আছে। যাদের চর্ম রোগ রয়েছে তারা যদি নিয়মিত এ ফুলের রস দিনে দুই থেকে তিনবার ক্ষত স্থানে মালিশ করে তাহলে দ্রুত সেরে যাবে।”
ভাট ফুলের মতো প্রকৃতিতে প্রাপ্ত লতা-পাতা ও গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের রয়েছে নানা উপকারিতা। তাই এসব উদ্ভিদ সংরক্ষণ করা জরুরি।