নানা ঔষধি গুণে আকন্দ
সাতক্ষীরা থেকে এস.এম নাহিদ হাসান:
আকন্দ। মাঝারি ধরণের গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Calotropis gigantea, C. procera। ঔষধি গাছ হিসেবে আকন্দের বেশ পরিচিতি রয়েছে। আমাদের দেশে গাছটির ফুল, পাতা, আঠা, শিকড় ও কা- বিভিন্ন চিকিৎসা কার্যে ব্যবহৃত হয়।
ঔষধি গাছ হলেও চলার পথে, ঝোপেঝাড়ে বিভিন্ন জায়গায় গাছটি জন্মাতে দেখা যায়। সাধারণ মানুষের কাছে গাছটির গুরুত্ব না থাকলেও বিভিন্ন ভেষজ চিকিৎসক, কবিরাজদের কাছে গাছটির অনেক গুরুত্ব হয়েছে। আকন্দ গাছ উচ্চতায় দুই থেকে আট মিটার হয়ে থাকে। পাতার আকার পাঁচ থেকে আট ইঞ্চি হয়। গাছটির পাতার নিচের অংশ তুলোর মত হালকা সাদা লোমশযুক্ত হয় এবং শিরা-উপশিরা মসৃণ হয়ে থাকে।
আমাদের দেশে শ্বেত ও লাল আকন্দ নামে দুই ধরনের আকন্দ জন্মাতে দেখা যায়। শ্বেত আকন্দের ফুলের রঙ সাদা এবং লাল আকন্দের ফুলের রঙ হালকা বেগুনি হয়। আকন্দ প্রায় সারা বছর জুড়ে ফুল দেয়। ফুলের কুঁড়ি ও ফুটন্ত ফুল দেখতে বেশ ভালই লাগে। তবে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকাল ফুল ফোটার প্রকৃত সময়। ফুল ফোটা অবস্থায় গাছটির সৌন্দর্য্য অন্যরকম। আকন্দ ফুলের পাপড়ি পাঁচটি হয়, মাঝে পাঁচটি খাঁজে বিভক্ত থাকে। প্রায় প্রতি শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগের বোঁটায় থোকা থোকা ফুল ফোটে এবং পাতার কক্ষ থেকে ফুলের বোঁটা বের হয়। গাছের পাতা, পাতার বোটা ও শাখা-প্রশাখা ভাঙলে সাদা আঠা বা কষ বের হয়।
ফুল শেষে গাছে ফল হয়, গাছে একত্রে এক বা একাধিক ফল ধরে। ফলের রঙ সবুজ, অগ্রভাগ বাঁকা, তাই গাছে ধরা ফল দেখতে ছোট পাখির মতো দেখায়। ফলের ভেতর তুলা হয় এবং এর ভেতর কালচে রঙের বীজ থাকে। এ ফল পাকে জুলাই-আগস্ট মাসে।
আকন্দ গাছের ফুল, পাতা, আঠা, শিকড়, কান্ড বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। চুলের রোগ, ব্যাথা সারাতে, হাঁপানি ও বিষনাশে বিশেষ কার্যকর। তাছাড়া দাঁদ, মেছতার দাগ ও টাকপড়া, কৃমি রোগ, হজমশক্তি বৃদ্ধিতে, পেট ব্যথা দূর করতে ব্যবহৃত হয় আকন্দ গাছের অংশ।
সাতক্ষীরা মসলা ভান্ডারের হেকিম বলেন, “আকন্দ দুই প্রকার হয়। বিভিন্ন ভেষজ চিকিৎসায় আকন্দ ব্যবহার করা হয়। আকন্দ মূলত দুই ধরণের হয়। শ্বেত ও লাল আকন্দ। চুলের রোগ, ব্যথা সারাতে, দাঁদ, মেছতা, কৃমি রোগ ও হজমশক্তি বৃদ্ধিতে আকন্দের যাদুকরী গুণ রয়েছে।” তিনি আরো বলেন, আকন্দ গাছের বিভিন্ন অংশ দিয়ে কম বেশি বিভিন্ন রোগের ওষুধ আমরা তৈরি করি। তবে আকন্দ গাছের সব অংশই বিষাক্ত। তাই এটা বেশি ব্যবহার না করা ভাল এবং ধরণা না থাকলে ব্যবহারের দরকার নেই। বাড়িতে তৈরিকৃত ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করতে হবে।”