নূর মোহাম্মদের উদ্ভাবিত ধানে বাম্পার ফলন

তানোর (রাজশাহী) থেকে মিজানুর রহমান

বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষের প্রধান খাবার ভাত। প্রয়োজনীয় খাদ্য জোগানের তাগিদ সকল ক্ষেত্রেই অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত। কিন্তু কৃষি কাজ খুবই কষ্টসাধ্য পেশা। ক্রমেই এর খরচ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশাপাশি মুনাফা কমে যাচ্ছে। ফলে কৃষককে কৃষি কাজে ধরে রাখা খুবই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাতে হুমকির মুখে পড়েছে খাদ্য নিরাপত্তা।

তাই রাজশাহীর তানোর পৌরশহরের গোল্লাপাড়া এলাকার আর্দশ কৃষক নূর মোহাম্মদ দেশের গণমানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে সংকরায়ণ ও নির্বাচনের মাধ্যমে উদ্ভাবন করেছেন আউশ, আমন ও বোরো মৌসুমের অনেকগুলো নতুন সারির ধান। দেশের প্রচলিত জাতকে উজ্জীবিত করে তার জীবনকাল কমানো হয়েছে। কোনটির ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। খরাপ্রবণ বরেন্দ্র ভূমিতে কিভাবে কম পানিতে ও কম সময়ে ধান কেটে ঘরে তোলা যায় এই নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে তার।

1529595977

কৃষক নূর মোহাম্মদ জানান, তার সংকরায়ণ সারি সংখ্যা প্রায় দুই শত’র অধিক এবং দেশ বিদেশের প্রায় দু’শতর অধিক জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ রয়েছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একাগ্রতার সঙ্গে গবেষণা করে অল্প সময়ে উৎপাদন সম্ভব এমন ধানের কৌলিক সারি উদ্ভাবন করা হয়েছে।

সারিগুলো স্বল্প মেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল, সরু সুগন্ধি ও খরা সহনশীল। খরা সহনশীল সারিগুলো প্রজননকালে ১৪-১৫ দিন বৃষ্টি না হলেও খরা মোকাবিলা করে ভালো ফলন দিতে সক্ষম। ৩৩টি সারির মধ্যে এন.এম.কে.পি ১০৪-৪ সারির ধান কর্তন করা হয়েছে। কর্তন ও মাড়াই শেষে প্রতি বিঘা ফলন পাওয়া যায় ২৮ মণ।

ধান কর্তন করার সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) মুহা. শওকাত আলী, সহকারী কমিশনার মো. আব্দুল্যাহ আল মামুন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নুরুল ইসলামসহ এলাকার কৃষকগণ।

উল্লেখ্য, কৃষক নূর মোহাম্মদ এই ধান গবেষণার জন্য ১৯৯৪ সালে কৃষিতে জাতীয় পুরস্কার ও ২০১৭ সালে জাতীয় কৃষিতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।

happy wheels 2

Comments