স্কুলগাছের আম তুলে দিলেন শিক্ষার্থীদের হাতে!
তানোর, রাজশাহী থেকে অসীম কুমার সরকার:
স্কুল জুড়ে বিভিন্ন আম গাছের সমারোহ। আর সেই সব গাছে গাছে ঝুলে আছে বাহারি আম। গোপালভোগ, ক্ষিরসা, ন্যাংড়া, ফজলি, গুটি প্রভৃতি নানা জাতের আম। পাকা আমের ঘ্রাণে স্কুলের চারিপাশ যখন মুখোরিত ঠিক তখনই সেইসব আমগাছ থেকে আম নামিয়ে নেয়া হলো। রমজানে স্কুল ছুটি। ক্লাস বন্ধ। তাতে কি, নিজ উদ্যোগে স্কুলের সকল শিক্ষার্থীদের বাড়িতে খবর দিয়ে স্কুলের আম তুলে দিলেন শিক্ষার্থীদের হাতে। এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিলেন তানোর কচুয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিখিল রঞ্জন প্রামানিক। তার এই কাজে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরাও পাশে থেকে সেই আম বিতরণ করলেন।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, সোমবার স্কুলের ১১৩ জন শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে জন প্রতি আটটি করে আম বিতরণ করা হয়। আর আম পেয়ে শিক্ষার্থীরা হৈ হুলোর করে আনন্দ প্রকাশ করে।
স্কুলগাছের আম ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া বিষয়টি এলাকার অভিভাবকদের মাঝে বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে ওই স্কুলের অভিভাবক প্রভাস কুমার দাস জানান, স্কুল গাছের আম এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের দেয়াতে আমার খুব ভাল লেগেছে। এই বিদ্যাপিঠের শিক্ষকরা শুধু পাঠদানই দেন না শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে লক্ষ্য রাখেন। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন নৈতিক বোধ থাকা প্রয়োজন।
কচুয়া-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি, কৌশিক, চতুর্থ শ্রেণি ছাত্র সুমন কুমার ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আশিকুর রহমান জানায়, আম পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগছে। ভাবতে পারিনি এইভাবে স্যার ডেকে আমাদের আম দিবেন।
প্রধান শিক্ষক নিখিল রঞ্জন প্রামানিক বলেন, “আমি নিজেই এই স্কুলের ছাত্র ছিলাম। তাই নিজের নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে এ কাজটি করেছি। ছেলে-মেয়েরা প্রতিদিন স্কুলে এসে আমগাছের আম দেখে। তাদেরও তো ইচ্ছে হয় আমগুলো খেতে। তাই স্কুলগাছের আমগুলো তাদেরই প্রাপ্য। এছাড়া আমি মনে করি এটাতে ছাত্র-শিক্ষকদের যে বন্ধন বা সম্প্রীতি তা অটুট থাকবে। আজকাল স্কুলের আম বিক্রি করে শুধু স্কুলফান্ডে টাকা জমা রাখা হয়। এটা ঠিক নয়। স্কুলের ফল স্কুল শিক্ষার্থীদের দেয়া উচিত। এতে তারা খুশী হয়।”