পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে রুবি খাতুনের সবজি বাগান
বাহলুল করিম, সাতক্ষীরা থেকে
বতবাড়ির আঙিনায় দুই কাঠা জমিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছেন কাটিয়া সরকার পাড়ার বাসিন্দা রুবি খাতুন। ২০১৭ সালের শুরুতে তিনি বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ শুরু করেন।
রুবি খাতুন পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ সরকারি কলেজে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তার স্বামী আব্দুস সবুর পেশায় একজন ব্যবসায়ী। শিক্ষকতার পাশাপাশি বাড়ির আঙিনায় তিনি গড়ে তুলেছেন সবজি বাগান। আর এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তাঁর স্বামী। অবসর সময়ে তারা দুইজন সবজি বাগানের পরিচর্যা করেন।
প্রায় দুই কাঠা জমিতে তিনি পেঁপে, ঢেঁড়শ, কচু, পুঁইশাক, উচ্ছে, ধনে পতা, ডাটা শাক, লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা মরিচ, ধুন্দল, বড় আলু ও লাউ চাষ করেছেন। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে তেলাকুচা, পিপুল, গাদমনি, বউনটি শাক জন্মেছে তার সবজি বাগানে। সবজি বাগানে তিনি কোন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করেন না। প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করে সবজি চাষ করেছেন তিনি।
সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে বাড়ি ফিরে তিনি সবজি বাগানের পরিচর্যা করেন। তিনি গাছগুলোতে পানি দেন। আগাছা পরিষ্কার করেন। বর্তমানে তাদের বাজার থেকে সবজি কেনার প্রয়োজন পড়ে না। সবজি বাগান থেকে সবজি তুলে তাদের প্রাত্যহিক প্রয়োজন মেটে। পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আশপাশের অনেককে বিনামূল্যে সবজি দিয়ে থাকেন। তিনি পাড়া-প্রতিবেশিদের সবজি বাগান তৈরি করতে উদ্বুদ্ধ করেন।
এ ব্যাপারে প্রতিবেশি নার্গিস সুলতানা বলেন, “আমরা প্রায়ই তার সবজি বাগানের সবজি খেয়ে থাকি। তিনি কোন প্রকার কীটনাশক বা সার ছাড়াই সবজি চাষ করেছেন। বিষমুক্ত সবজির স্বাদই আলাদা। এছাড়া তিনি আমাদের বিষমুক্ত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করেন।”
একান্ত আলাপকালে রুবি খাতুন বলেন, “২০১৭ সালের শুরুর দিকে বাড়ির আঙিনায় দুই কাঠা জমিতে সবজি বাগান শুরু করি। প্রথমে আমি পেঁপে গাছ রোপণ করি। এরপর আস্তে আস্তে ঢেঁড়শ, কচু, পুঁইশাক, উচ্ছে, ধনে পতা, ডাটা শাক, লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা মরিচ, ধুন্দল, বড় আলু ও লাউ চাষ করি। কলেজ থেকে ফিরে সবজি বাগানের পরিচর্যা করি। কেননা বাজারে যে সব সবজি বা তরকারি পাওয়া যায় তা সার বা কীটনাশক দিয়ে চাষ করা হয়। যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই নিজ উদ্যোগে বিষমুক্ত সবজির বাগান করেছি। এখন আর বাজার থেকে সবজি কেনার প্রয়োজন হয় না। বরং পাড়া-প্রতিবেশিদের বিষমুক্ত সবজি দিয়ে তাদেরকে বিষমুক্ত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করি।”
রুবি খাতুনের মতো বসত-বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা অনেকটাই মেটানো সম্ভব। এছাড়া বিষমুক্ত সবজি চাষ করে শারীরিক অনেক সমস্যা থেকেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।