সাম্প্রতিক পোস্ট

পাখিটি সুস্থ হয়ে মুক্ত আকাশে উড়ল

শ্যামনগর সাতক্ষীরা থেকে ফজলুল হক

সড়ক দুর্ঘটনার শিকার পাখিটি উদ্ধার করে মুক্ত আকাশে উড়াল দিলাম। দিনটি ছিল ২৮ শে সেপ্টেম্বর রোজ সোমবার। সোমবার সকাল ১০টার দিকে জরুরি কাজে কলবাড়ি থেকে শ্যামনগরের উদ্দেশ্য রওনা দিই। শ্যামনগরে জরুরি কাজ শেষে বেলা ২টার দিকে মটর সাইকেল যোগে আটুলিয়া ইউনিয়ের ভিতর দিয়ে নওয়াবেঁকী-হায়বাতপুর রোডের মধ্যে কলবাড়ি উদ্দেশ্য রওনা দিই। যখন আমি কাছারি ব্রীজের ওভার করেছি আমার গাড়ীর গতি ছিলো প্রায় ৫০ এর অধিক। এ সময় রাস্তার ওপাশ থেকে আসা একটি মটর সাইকেল বেশ গতিতে আসছিলো। প্রায় সংঘর্ষ লাগার উপক্রম হয়েছে।

হঠাৎ এ সময় একটি শব্দ পেলাম। গাড়ি থামালাম। পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখি একটি পাখি। সড়কে দু’টি মটরসাইকেল ক্রস করার সময় এই পাখিটি সম্ভবত আঘাত পেয়েছে। এসময় একজন সাইকেল চালক জানালেন পাখিটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। আমি দেরি না করে পাখির কাছে গিয়ে দেখলাম পাখিটি্কিটি পেঁচা। পেঁচাটি এপাশ থেকে অন্য পাশে যাওয়ার সময় চলন্ত গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে রোডের পাশে পড়ে আছে। আমি পাখিটাকে হাতে নিয়ে মাথায় পানি দিলাম এবং পান করালাম। ছায়াযুক্ত জায়গায় নিয়ে পাখিটাকে সেবা করলাম। কিছুক্ষণ পর সুস্থ হয়ে পাখিটি উড়াল দিয়ে একটি গাছের ডালে গিয়ে বসলো! তা দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো। একটি পাখিকে রক্ষা ও সেবা করতে গিয়ে ভেতরে  এক ধরনের আনন্দনাভূতি জন্মালো।

আমার আসার আগে অনেকে এই রাস্তায় এসেছেন। তারা নিশ্চয়ই পাখিটাকে দেখেছেন। কিন্তু কেউ উদ্ধার করলো না! আমরা আসলে নিজেদের নিয়ে এক বেশি ব্যস্ত হয়েছি যে অন্যের দিকে তাকানোর সুযোগ পাইনা! পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার যে অসংখ্য প্রাণ-প্রকৃতি রয়েছে তাদের প্রতি একটু মায়া মমতা তাই তৈরি হয় না আমাদের মধ্যে। আমি তখন পাখিটি বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করছি,তখন অনেকেই হাসছেন। অনেকে আবার বলেছেন, ‘পাখির জন্য মটর সাইকেল থামিয়ে কি করছেন।’

আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তার সকল প্রাণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। আমরা সবাই মিলে এক সাথে এই সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে থাকি।

happy wheels 2

Comments