লেবু গ্রামের লেবু চেয়ারম্যান

নেত্রকোনা থেকে পার্বতী রাণী সিংহ
গ্রামের নাম বাসাটি। ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার চৌরাস্তার পাশেই অবস্থিত এই গ্রামটি। বর্তমানে লেবু গ্রাম নামে পরিচিত। গ্রামের ৮০ কৃষক তাদের ৯০০ কাঠা জমিতে লেবু চাষ করছেন। গ্রামের লেবু চেয়ারম্যান  আ. খালেক একাই করেন ৮০ কাঠা জমিতে লেবু চাষ করছেন। তিনি প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো লেবু বিক্রি করেন বলে জানান। মূলত তিনিই এই গ্রামে প্রথম লেবু চাষ সূচনা করেন বলে গ্রামবাসীরা জানান। তাই লেবু চাষ সম্পর্কিত যত ধরনের তথ্য তাঁর কাছেই পাওয়া যা। গ্রামের মানুষকে লেবু চাষে আগ্রহী করে তোলা এবং লেবুর বাজার তৈরিতে তাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য। এি গ্রামে তিন ধরনের লেবু চাষ করা হয়: সেগুলো হলো এলাচি লেবু, কাগজি লেবু এবং টুবা লেবু ।

14
বাসাটি গ্রামে প্রায় দশ বছর আগে লেবু চাষ শুরু হয়। প্রথমে শুরু করেন কৃষক কৃষক আ: খালেক (যিনি লেবু চেয়ারম্যান নামে বেশ পরিচিত) এবং কৃষক লুৎফর রহমান। লেবু চাষে লাভ বাড়তে থাকায় গ্রামের কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠেন, বাড়তে থাকে কৃষকের সংখ্যা। দিন দিন সম্প্রসারিত হতে থাকে লেবু চাষের জমি। গ্রামে ঢুকতেই রাস্তার দুপাশের জমিতে লেবু গাছ আর গাছ। আগ্রহ প্রসঙ্গে কেউ যদি লেবু বাগানে কে আছেন হাঁক দিলে উত্তর আসে ‘আমি লেবু চেয়ারম্যান’। আ. খালেক তথা লেবু চেয়ারম্যান সারাদিন লেুব ক্ষেতেই থাকেন। লেবুর যতœ করেন। নিজেই লেবু গাছ তুলেন এবং বাজারজাত করেন। সাধারণত তিনি নান্দাইল, চৌরাস্তা, তারাইল, কিশোরগঞ্জ বাজারে লেবু বিক্রি করতে যান। লেবু চাষ করে লাভবান হওয়ার বর্তমানে তার আর্থিক অবস্থা বেশ স্বচ্ছল। সমাজেও সম্মান বেড়েছে তাঁর। মানুষে তাকে মূল্য দেয়। তিনি জানান, লেবু বিক্রি করে এ পর্যন্ত তিনি  ৩০ কাঠা জমি কিনেছেন।

লেবু চাষে লাভবান হওয়ায় বর্তমানে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা লেবু গ্রাম পরিদর্শন করতে যান এবং লেবু চেয়ারম্যান এর কাছ থেকে লেবু চাষের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ নেন। এভাবে সম্প্রতি ছয়জন কৃষক লেবু গ্রামের লেবু চাষ ও চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করেন। তাঁর কাছ থেকে লেবু চাষের অভিজ্ঞতা শুনে নিজেরা তাদের পতিত জমিতে লেবু চাষের আগ্রহ দেখান। এই প্রসঙ্গে কৃষক সোয়েব ঠাকুর বলেন, “লেবু গ্রামের মানুষের উদ্যোগ এবং তাদের পরামর্শ আমাদের কাজে লাগবে। আমরা আশেপাশে পতিত জমিতে লেবু গাছ লাগিয়ে লাভবান হতে পারবো।”

happy wheels 2

Comments