সরকার ও জনগণের যৌথ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সবুজায়ন
তানোর, রাজশাহী থেকে শহিদুল ইসলাম শহিদ:
রিশিকুল ‘স্বপ্নের ভেলা’ তরুণ সংগঠন ও ‘খড়িয়াকান্দি প্রাণ বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি’ সামাজিক অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বৃক্ষরোপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাই যোগাযোগ করেন বনবিভাগ অফিসে। তার আলোকে ৩০.০৫.১৭ তারিখে উপজেলা বনবিভাগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম ও সহকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম রিশিকুল এলাকার সরকারি জায়গা, রাস্তার ধার ও খালের পাড় পর্যবেক্ষণ করেন। পর্যবেক্ষণ শেষে সংগঠনের কার্য নির্বাহী সদস্যদের সাথে রিশিকুল প্রাথমিক বিদ্যালয় অফিস কক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বনবিভাগ কর্মকর্তা সরকারি সামাজিক বনায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদানকালে বলেন, “রিশিকুল ইউনিয়নে (৫০০০০) পঞ্চাশ হাজার চারা রোপণ করা হবে। যা সরকারিভাবে বিনা মুল্যে চারা সরবরাহ করা যাবে। পরিচর্জাকারীরা সেই স্থানে যদি গাছের বৈচিত্র্য বাড়াতে পারেন তাহলে সরকারী ভাবে বেশি বৈচিত্র্য রক্ষাকারীকে সরকারিভাবে পুরষ্কার দেওয়া হবে। একাজে সংগঠনের জন্য অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে কর্মকর্তা জানান।
সেই ধারাবাহিকতায় আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৭ উপলক্ষে উপজেলা বনবিভাগ গোদাগাড়ী, রিশিকুল স্বপ্নের ভেলা সংগঠন, খড়িয়াকান্দি প্রাণ বৈটিত্র্য রক্ষা কমিটি সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযানের শুভ উদ্বোধন করা হয়।অভিযানের অংশ হিসেবে প্রসাদপাড়া হতে খড়িয়াকান্দি পর্যন্ত প্রায় ২.৫ কি. মি. খাড়ির পাড়ে গাছ রোপণ শুরু করা হয়। রিশিকুল স্বপ্নের ভেলার ২২ জন ও খড়িযাকান্দি প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির ৩০ জন মোট ৫২ জন সদস্য আগামী এক সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। উক্ত খাড়ির পাড়ে প্রায় (২০) বিশ হাজার চারা রোপণ করা সম্ভব বলে সপ্তাহ ধরে এই আয়োজন।
সরকারি বনবিভাগ থেকে বিনামূল্যে এই দুটি সংগঠনকে এসব চারা সরবরাহ করা হয়েছে। উপজেলা বনবিভাগ হতে চারা রোপণের স্থান পর্যন্ত পরিবহনে সরকার সহায়তা দিচ্ছে। পাশাপাশি গাছের চারা রোপণের জন্য প্রতি চারার জন্য দুই টাকা করে সংগঠনকে প্রদানও করছেন সরকারি বনবিভাগ। রোপণকৃত সকল চারা সংগঠনকে পরিচর্যা করতে হবে। যখন গাছগুলো বড় হবে এবং বিক্রির উপযুক্ত হবে তখন এই সরকারি বনবিভাগ দরপত্র আহবানের মাধ্যমে এটি বিক্রি করবেন এবং বিক্রির ৫৫% ভাগ টাকা সংগঠনের সদস্যদের চেকের মাধ্যমে প্রদান করা হবে বলে বনবিভাগ কর্মকর্তা জানায়।
সামাজিক বনায়ন সরকার ও জনগণের যৌথ অংশীদারিত্বের (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ) একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। গাছ সরকারের, জমি সরকারের এমনকি পরিবহন এবং রোপণ এর খরচও সরকারের। শুধু এলাকার জনগোষ্ঠিকে সংগঠিত করে দায়িত্ব নিয়ে সামাজিক বনায়নকে বাস্তবায়ন করতে হবে। বাস্তবায়ন শেষে এটি পরিচর্যা এবং ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এই সামাজিক বনায়ন থেকে প্রতিবছর বছর যে জ্বালানি পাওয়া যাবে তাও ভোগ করতে পারবে সংশ্লিষ্ট্ জনগণ। আর নির্দিষ্ট সময় পরে আর্থিক লাভ তো আছেই। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এলাকার পরিবশে একদিকে যেমন সবুজ, শ্যামল আর প্রাণে ভরে উঠবে তেমনি অবকাঠামোও হবে টেকসই। আমরা যদি শুধু ব্যক্তিগত আর তাৎক্ষণিক লাভ এর কথা চিন্তা না করে সমষ্টিগত এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক এবং পরিবেশের কথা বিবেচনা করি- তাহলে শুধু সামাজিক বনায়ন এর মাধ্যমে ভরে তুলতে পারি আমাদের চারপাশকে আরো সবুজে।