মো. আ. রহিমের গাছের পাঠশালা
রাজশাহীর তানোর থেকে অমৃত সরকার
রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের শ্রীখন্ডা গ্রামের মো. আ. রহিমের বাড়ি। বাড়ির চারপাশকে তিনি সজ্জিত করে রেখেছেন বিভিন্ন প্রকার গাছ দিয়ে। তাঁর বাড়ি পরিদর্শন করে দর্শনার্থীরা বিভিন্ন ধরনের গাছ, গাছের ফল এবং গাছের ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। এজন্য তাঁর বাড়িতে সবসময়ই কোন না কোন দর্শনার্থী যান গাছ সম্পর্কে জানার জন্য এবং সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের চারা সংগ্রহ করার জন্য।
মো. আ রহিমের বাড়িটি তাই নিজ এলাকা ও আশেপাশের এলাকাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছে জানা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের এক ব্যতিক্রমী মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। কারণ এই বাড়িটিতে বিভিন্ন গাছ সম্পর্কে যেমন জানার সুযোগ রয়েছে তেমনি গাছের চারা সংগ্রহ করার যাচ্ছে। অনেকেই এই বাড়ি থেকে বিভিন্ন গাছ চারা সংগ্রহ করে নিজেদের বাড়িকেও সমৃদ্ধ করছেন।
গতকাল (১২ জুন) বারসিক’র উদ্যোগে মো. আব্দুর রহিমের বাড়িটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গাছের পাঠশালা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গাছের পাঠশালা উদ্বোধনের দিনে হরিদেবপুর ও গোকুল-মোথুরা গ্রামের কৃষক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে। তাঁরা ‘গাছের পাঠশালা’ থেকে বিভিন্ন ধরনের গাছের চারা সংগ্রহ করেন। এছাড়া বিভিন্ন গাছ সম্পর্কেও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। অন্যদিকে তালন্দ ও তানোর কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে গাছ সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করেন। তালন্দ কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক শ্রী নিশিত চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, “মো. আ. রহিম সমাজসেবক হয়েও নিজের বাড়িকে বিভিন্ন প্রকার গাছ রোপণ করে এক সমৃদ্ধ বাড়ি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যেখান থেকে বিভিন্ন মানুষ বিনামূল্যে গাছের চারা সংগ্রহ করতে পারছেন। এটি সমাজসেবার একটি ব্যাতিক্রমী উদাহরণ।”
গাছের পাঠশাল প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে মো. আ. রহিম বলেন, “আগে থেকেই আমার বাড়িতে বিভিন্ন গাছের সমারোহ ছিল। আমার সাথে বারসিকের সংযুক্ততার পর থেকে আমার এই কার্যক্রম আরো সমৃদ্ধ হতে থাকে।” তিনি আরও বলেন, “আগে আমি নিজে দর্শনার্থীদের বিভিন্ন গাছ সম্পর্কে তথ্য বিনিময় করতাম। তবে বর্তমানে একজন দর্শনার্থী যে কোন গাছ দেখলেই এর নাম ও উপকারী দিক সম্পর্কে জানতে পারবে।” বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চলের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “বৃক্ষ পাগল মানুষ এই আ. রহিম তাঁর কার্যক্রমকে বিভিন্ন মাধ্যমে উপস্থাপন এবং অনান্য মানুষের মাঝে সহভাগিতার উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা এই কাজকে সহযোগিতা করছি।”